বিএনপির রাজনীতিতে তিনিই বয়োজ্যেষ্ঠ…

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:১৭ | প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:২১

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপি নেতা এস এ খালেক। বৃহত্তর মিরপুর থেকে পাঁচবার নির্বাচিত হয়েছেন সংসদ সদস্য। বয়স ইতিমধ্যে ৯০ পার হয়েছে। সেই হিসেবে বিএনপির রাজনীতিতে বর্তমানে তিনিই বয়োজ্যেষ্ঠ। যদিও প্রবীণ এই রাজনীতিক গত কয়েক বছর ধরে বয়সজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।

সবশেষ মহামারি করোনায় দুইবার আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে। তবে সম্প্রতি হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় ফিরেছেন বৃহত্তর মিরপুরের জনপ্রিয় এই রাজনীতিক।

বিএনপি চেয়ারপারসন, স্থায়ী কমিটি ও ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে এস এ খালেকের কাছাকাছি বয়স ব্যারিস্টার জমির উদ্দিনের। ১৯৩১ সালে জন্ম নেন প্রবীণ এই আইনজীবী ও সাবেক স্পিকার।

এস এ খালেকের দুই ছেলের মধ্যে বড় সৈয়দ মহসিন মিরপুর-পল্লবী ও কাফরুল এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি কানাডায় বসবাস করছেন।

আর ছোট ছেলে এস এ সিদ্দিক সাজু বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। রাজনীতির পাশাপাশি পারিবারিক ব্যবসায় সময় দেন তরুণ এই রাজনীতিক। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নও পেয়েছিলেন তিনি।

কেমন আছেন এস এ খালেক?

পারিবারিক সূত্র জানায়, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন এস এ খালেক। তার হার্টে এখন মোট ১৩টি রিং পরানো রয়েছে। এক বছর ধরে তাকে নল দিয়ে তরল খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। মাঝে বাসায় নেওয়া হলেও কিছুদিন আগে আবার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বেশ কয়েক দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর বর্তমানে বাসায় আছেন এস এ খালেক।

ঢাকায় সবাইকে ছাড়িয়ে এস এ খালেক

ঢাকা মহানগরীর সংসদীয় আসনগুলোতে সাধারণত স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্য থেকেই সাংসদ নির্বাচিত হয়ে থাকেন। স্বাধীনতার পর ঢাকায় বসতি বাড়লেও ২০০৮ সালের আগে পর্যন্ত প্রায় সব কয়টি আসনে বিজয়ী হন স্থানীয় অধিবাসীরাই। অনেক আসনে এখনো তা বজায় আছে।

আবার রাজধানীর গুরুত্ব বিবেচনায় অনেক আসনে দলের প্রধানরাও নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন বিভিন্ন সময়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আছেন এই তালিকায়।

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তখনকার ঢাকা-১২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অন্যদিকে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।

এ রকম ব্যতিক্রম ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঢাকার আসনগুলোতে প্রার্থী দেওয়ার বেলায় দলগুলোর কাছে স্থানীয় অধিবাসীদের প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। ফলে ঢাকায় বেশিবার সাংসদ হওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে তারাই। তবে সবার শীর্ষে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এ খালেক। মোট পাঁচবার সাংসদ নির্বাচিত হন বিএনপির এই নেতা।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালে বিএনপির টিকিটে প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হন এস এ খালেক। এরপর ৮৬ ও ৮৮ সালে পরপর দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করে বিজয়ী হন দলটির এই কেন্দ্রীয় নেতা।

এলাকায় এস খালেকের জনপ্রিয়তা এমনই ছিল যে, দেশের জাঁদরেল আইনজীবী ও রাজনীতিক ড. কামাল হোসেনও বিপুল ভোটে তার কাছে পরাজিত হন।

দীর্ঘ সময় ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়ায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন এস এ খালেক। অন্যদিকে বড় মাপের ব্যবসায়ী হওয়ায় নিজের কর্মস্থলগুলোতে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে জনকল্যাণমূলক নানা কাজ করে মানুষের স্মৃতিপটে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

বাবার পথে হাঁটছেন উত্তরসূরি সাজু

এদিকে বাবার পথ ধরে রাজনীতিতে হাঁটছেন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষা শেষে দেশে ফেরা ছোট ছেলে এস এ সিদ্দিক সাজু। উত্তরসূরি হিসেবে আগেভাগেই ছেলেকে সামনে নিয়ে আসেন এস এ খালেক। ছেলেও জনবান্ধব বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দল থেকে ধানের শীষের মনোনয়নও পান সাজু।

দলের সব কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছেন তরুণ রাজনীতিক সাজু।

আবাসন খাত, পরিবহন সেক্টরসহ নানা খাতে খালেক পরিবারের বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। যা পুরোটাই দেখভাল করতে হচ্ছে সাজুকে। সমাজসেবামূলক কাজেও এস এ খালেকের পরিবারের নানা পদক্ষেপ রয়েছে, যার পুরোটাই এখন এস এ সিদ্দিক সাজু দেখভাল করছেন।

জানা গেছে, ১৯৯১ সাল থেকে সাজু তার বাবার প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কের কাজ করেন। ২০০৮ সালের পর বাবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের হাল ধরেন সাজু। দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয়তার কারণে এরই মধ্যে ৭৬টি মামলার আসামিও হয়েছেন তিনি। এরপরও এলাকা ছেড়ে যাননি। বরং বিপদে-আপদে নেতাকর্মীদের পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। মামলা পরিচালনায় সহায়তার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের আর্থিকভাবেও সহায়তা করে আস্থা অর্জন করেছেন সাজু।

(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দুর্নীতি ও ভোটাধিকার হরণ ছাড়া আ.লীগের আর কোনো অর্জন নেই : এবি পার্টি

‘দেশে ইসলামবিদ্বেষী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে’

ক্ষমতাসীনদের কেউ ভালো নেই: গয়েশ্বর

সিন্ডিকেটকে কোলে বসিয়ে বিরোধীদলের ওপর দায় চাপাচ্ছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ

ইফতার পার্টিতে আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আ.লীগের গিবত গায়: প্রধানমন্ত্রী

বাংলার মাটি থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই: ওবায়দুল কাদের

দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা চাইলেন মঈন খান

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী: আ.লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় চরমোনাই পীরের উদ্বেগ 

শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বস্তরে কুরআনের শিক্ষা চালু করতে হবে: মুজিবুর রহমান

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :