মাড়ভাত অনেক সুস্বাদু, জানুন রান্নার উপায়

ভেতো বাঙালি। রসনা প্রিয় খুব। আমিষ বা নিরামিষ- দুধরনের খাবারের প্রতিই আসক্তি। ভাতের প্রতি বাঙালির যে ভালোবাসা, তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করা চলে। অনেক রকমের ভাত আছে। মধ্যযুগের অনেক কাব্যে ফ্যানা পান্তা ও ফেনা বা মাড় ভাতের কথা পাওয়া যায়। কিন্তু হাল আমলে মাড়ভাতের কথা শুনলে নাক সিঁটকাবে অনেকেই। কেননা, এটি দেখতে থকথকে।
আতপ চালে রান্না হয় মাড়ভাত। মাড় গালার ঝামেলাও নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যের পক্ষেও অনেক ভালো এটি।
অনেকে মনে করেন, মাড়ভাত শুধুই বাঙালির। এবং মাত্র এক রকমভাবেই এটি রান্না করা যায়। কিন্তু না, ভারতের রান্না সংক্রান্ত বিভিন্ন গ্রন্থে এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশে এর প্রচলন খুব একটা না থাকলেও পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে মাড়ভাত কিংবা ফেনসাভাত বিশেষ প্রিয়।
অন্তত তিনভাবে রান্না করা যায় মাড়ভাত। রান্না ঠিকঠাক হলে খেতেও বেশ স্বাদের।
কীভাবে রান্না করবেন মাড়ভাত?
১. খুবই সহজ ব্যাপার মাড়ভাত বা ফেনাভাত বা ফেনসাভাত রান্না। চাল বেছে ভালোভাবে ধুয়ে রেখে দিন। পাতিলে পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে তাতে চাল দিতে হবে। ভাত সেদ্ধ হয়ে এলে হাতা দিয়ে চালের দানাগুলি ভেঙে ফেনের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। দেখা যাবে ভাত আর ফেন মিলে থকথকে ভাব চলে এসেছে। পানিতে চাল দেওয়ার প্রায় ৩৫ মিনিট পর এটি নামিয়ে নিন। এই মাড়ভাত বা ফেনসাভাত গরম গরম ঘি বা অল্প মাখন দিয়ে খেতে পারেন। দারুণ স্বাদ পাবেন। বিভিন্ন ভাজি বা তরকারি দিয়েও এই ভাত খাওয়া যায়।
২. আরেক রকমের মাড়ভাত রয়েছে, যা ভারতে প্রচলিত। একে বলে মাদ্রাজি ফেনসা ভাত। এটি মূলত দক্ষিণ ভারতের মানুষেল কাছে প্রিয়। এতে লাগে চাল, পানি লবন, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা এবং ঘি। এই ভাত রান্না করতে প্রথমে কাঁচা মরিচ চিরে নিয়ে আদা এবং পেঁয়াজ কেটে রাখুন কুচি কুচি করে। পাতিলে আদা, মরিচ, পেঁয়াজ, পানি, চাল এবং লবন দিয়ে মুখ বন্ধ করে রেখে দিন কিছুক্ষণ। পানির বলক উঠলে অর্থাৎ উথলে উঠলে ঢাকনা নামিয়ে দিন। প্রায় আধা ঘণ্টা লাগবে সেদ্ধ হতে। এর পর হাতা দিয়ে চালগুলো ভেঙে দিন। ফেনে ভাতে মিশে যাবে। এর পর আরও ১০ মিনিট ফুটিয়ে নামিয়ে নিন। পরিবেশন করুন অল্প ঘি ছড়িয়ে। যথাযথভাবে রান্না করতে পারলে মুখে লেগে থাকবে এর স্বাদ।
৩. আরও এক ধরনের মাড়ভাত রয়েছে, মালাই ফেনসা। এটি রান্না করার উপকরণ মাদ্রাজি ফেনাভাতের মতেই। বাড়িত দরকার শুধু নারকেল। কুরিয়ে রাখা নারকেলের দুধ একটি পাত্রে আলাদাভাবে রেখে দিন। গরম পানিতে নারকেলের ছোবড়া ফেলে জলীয় দুধও বের করে নিন। এর পর পাতিলে চাল, মরিচ- আদা আর পেঁয়াজ কুচি এবং নারকেলের দুধ একসঙ্গে দিয়ে পাত্রের মুখ বন্ধ করে ফোটাতে থাকুন। পানি উথলে উঠলে ঢাকনা খুলে দিন। আধ ঘন্টায় চালটা সেদ্ধ হয়ে এলে নারকেলের দুধে সেদ্ধ হওয়ার ফলে মন মাতানো সুগন্ধ বের হবে এই খাবারে। নামিয়ে নেওয়ার কিছু ক্ষণ আগে হাতা দিয়ে চালের দানা ভেঙে ফেনের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। আরো ১০ মিনিট ফুটিয়ে নামিয়ে ফেলুন। এইবার গরম গরম পরিবেশন করুন।
দক্ষিণ ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ এই মাড়ভাত শুঁটকির সঙ্গে খেতে খুব পছন্দ করে।
ঢাকাটাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/এফএ

মন্তব্য করুন