টিকায় কেটেছে ‘ভয়’ তাই মাস্ক পরতে অনীহা!

আকিবুর রহমান, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২২, ১৮:৪৬
অ- অ+

দেশে আবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। অল্প কদিনেই দৈনিক শনাক্ত হার থরথরিয়ে বেড়ে ছাড়িয়ে গেছে ১৫ শতাংশ। এভাবে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা অনেকাংশে উপেক্ষা করছে সাধারণ মানুষ। চলাচলের ক্ষেত্রে মাস্ক পরতেও অনীহা দেখাচ্ছেন অনেকেই। পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজধানীর শাহবাগ মোড় ও বাংলামোটর পয়েন্টে প্রতিবেদকের কথা হয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যাদের কারো মুখেই মাস্ক ছিল না। মঙ্গলবার দুপুরে শাহবাগ মোড়ে বাসের অপেক্ষায় ছিলেন নাজমুল ইসলাম নামে এক পথযাত্রী।

মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দুই ডোজ টিকা নিয়েছি। এখন আর মাস্ক পরে কি হবে?’ টিকা নেওয়ার পরও অনেকের আক্রান্ত হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের প্রধান ফটকে কথা হয় চিকিৎসা নিতে আসা মধ্যবয়সী আবুল কাশেমের সঙ্গে। মুখে মাস্ক না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এই ব্যক্তি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি তো টিকা নিছি। মাস্ক পরলে দম আটকায়, তাই পরতে পারি না।’

বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ও ইস্টার্ন প্লাজাসহ কয়েকটি মার্কেটে সরেজমিনে দেখা যায়, এই বিপনীবিতানগুলোতে কেনাকাটা করতে আসা বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। কোনো রকম স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই তারা অবাধে ঘোরাফেরা করছেন।

বাংলামোটর মোড়ে সাফিনা রহমান নামে এক তরুণী মাস্ক না পরার বিষয়ে প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি অতো মানুষের ভিড়ে যাই না। জরুরি কাজে বের হয়েছিলাম। মাস্ক পরা হয়নি তবে পরা দরকার ছিল।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জোরদার চলছে টিকাদান কার্যক্রম। এরইমধ্যে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ পূর্ণ ডোজের আওতায় চলে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

টিকার কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমুক আর না কমুক মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই বলে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণ বেড়ে চলার মধ্যে এই ভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি রুখতে একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি।

সম্প্রতি এই কমিটির দেওয়া পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে—স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে পুনরায় উদ্বুদ্ধ করতে সব ধরনের গণমাধ্যমে অনুরোধ জানানো, সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি প্রয়োগ করা; সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম বর্জন করা; ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানে (মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) মাস্ক পরা।

জ্বর, সর্দি, কাশি হলেও অনেকে করোনা পরীক্ষা করছেন না। এ কারণে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। সংক্রমণও বাড়ছে এ কারণে। কারো উপসর্গ দেখা দিলে এবং সংক্রমিত মানুষের সংস্পর্শে গেলে তাদের করোনা পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করার পরামর্শও দিয়েছে টেকনিক্যাল কমিটি।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৯ হাজার ১৪৫ জনে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া দুই হাজার ৮৭ জনকে নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬১ জনে। নমুনা পরীক্ষা শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দুদিন সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুন/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সিরাজগঞ্জে সরকারি অফিস ‘দখল করে’ জামায়াতের কার্যালয়ে
গণবিরোধিতার কারণে বিশেষ গোষ্ঠীকে দেশের মানুষ অনেক আগেই হলুদ কার্ড দেখিয়েছে: সেলিম উদ্দিন 
চিলড্রেন্স পার্টি কথাবার্তা শুনে আমাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই: মির্জা আব্বাস 
খুলনায় ট্রেন-ট্রাক সংঘর্ষ, রেল যোগাযোগ বন্ধ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা