৫৩ বছর ধরে উন্নয়নবঞ্চিত যশোরের ভালুকঘর বিদ্যালয়

সুশান্ত মল্লিক, কেশবপুর (যশোর)
  প্রকাশিত : ০১ জুলাই ২০২২, ১৪:০৫
অ- অ+

দীর্ঘ ৫৩ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি যশোরের কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভালুকঘর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। বর্তমান শ্রেণি কক্ষ, চেয়ার-বেঞ্চ, সুপেয় পানি, টয়লেটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এর শিক্ষাক্রম একেবারেই ভেঙে পড়েছে। ভবন বরাদ্দের দাবি জানিয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোন প্রতিকার মেলেনি।

বিদ্যালয়ের অফিস জানায়, ১৯৬৯ সালে ৮৮ শতক জমির ওপর ঐতিহ্যবাহী ভালুকঘর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের ৪ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়ায় ১৫ জন শিক্ষক ও ৪ জন কর্মচারী রয়েছেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে শিক্ষকদের অর্থায়নে ৪ রুমবিশিষ্ট দুটি টিনের চালার ঘরসহ ২ রুমবিশিষ্ট একটি আধাপাকা ভবন নির্মাণ করা হয়।

কিন্তু টিনের চালার ঘর দুটির টিন নষ্ট হয়ে গেলেও অর্থাভাবে তা আজও পুণসংস্কার সম্ভব হয়নি। এছাড়া, আধাপাকা ভবনের ভিত পাশের দীঘিতে ধসে বিলীন হওয়ায় ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৮টি শ্রেণি কক্ষের প্রয়োজন থাকলেও রয়েছে অফিস রুমসহ মাত্র ৩টি। কক্ষের অভাবে বাধ্য হয়ে একই ক্লাসে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হয়।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, তীব্র কক্ষ সংকটের কারণে ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে অনেক সময় একটি শ্রেণির পাঠদান বন্ধ রেখে অন্য শ্রেণির পাঠদান করাতে হয়। মাঝে মধ্যে মেঝে ও খেলার মাঠেও পাঠদান করা হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একই টয়লেট ব্যবহার করতে হয়।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অমৃতা দাস পূজা, ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান জানায়, বেঞ্চ ও শ্রেণি কক্ষ সংকটে ক্লাসে গাদাগাদি করে বসতে হয়। প্রচণ্ড গরমে আমাদের খুব কষ্ট হয়। বিদ্যালয়ে সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা না থাকায় দূর থেকে খাওয়ার পানি আনতে হয়। তাদের সাইকেল রাখার জায়গা, ওয়াশরুমসহ কোন কমনরুম নেই।

প্রধান শিক্ষক বাসুদেব সেন গুপ্ত বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে শ্রেণি কক্ষ ও চেয়ার-বেঞ্চ সংকট। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে নেই কোন কম্পিউটার/ল্যাপটসহ ল্যাব। বিজ্ঞান বিভাগ চালু থাকলেও নেই বিজ্ঞানাগার। ৩ রুমের একাডেমিক ভবনটির বয়স ২ যুগ না পেরুতেই এর পলেস্তরা খসে পড়ে মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীরা আহত হচ্ছে। ২টি রুম পরিত্যাক্ত ঘোষণা ছাড়াও বহুদিন আগে বিদ্যালয়ের টিনের চালার ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। এক সাথে সকল শিক্ষার্থীদের পাঠদান কারাণোর মত পর্যাপ্ত জায়গা তাদের নেই। ভবন বরাদ্দের জন্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কয়েকবার আবেদন করেও বরাদ্দ মেলেনি। আগামী এসএসসি পরীক্ষায় ৭৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। জায়গার অভাবে তাদের অতিরিক্ত পাঠদান সম্ভব হয় না।

বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ডা. অজিত কুমার ঘোষ বলেন, দীঘিতে ঘের মালিক রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন। যে কারণে আধাপাকা ভবনটির ভিতের মাটি ধসে তলদেশ ফাঁকা হয়ে গেছে। যে কোন সময় ভবনটি দীঘিতে ধসে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ মুহূর্তে নতুন একটি ভবন বরাদ্দ না মিললে এসব সমস্যার সমাধান হবে না।

(ঢাকাটাইমস/১জুলাই/এলএ/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সরকারি দপ্তরে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর বন্ধ
কুমিল্লা বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত  
হাসপাতালের গার্ডকে চড় মেরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হারান মুরাদ হাসান! কোথায় এখন!
ভারতের ইন্ধনে সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এনবিআর- রাশেদ প্রধান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা