বস্তায় ভরার সময় নষ্ট হলো দুই টন টিসিবি পণ্য! দায় কে নেবে?

কুড়িগ্রামে রাতের অন্ধকারে প্রায় ২ টন পচা দুর্গন্ধযুক্ত ডাল, চিনি ও ছোলা জঙ্গলে মাটির গর্তে চাপা দেওয়া হয়েছে। সরকারি এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ নষ্ট হওয়ার পেছনে কে বা কারা দায়ী তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিনহাজুল ইসলাম জানান, ট্রেডিং করপরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে তদন্ত কমিটির সুপারিশক্রমে এসব খাদ্য পণ্য মাটিতে পুঁতে নষ্ট করা হয়। এটাকে অনিয়ম বা অপচয় বলার অবকাশ নেই। কারণ সল্প আয়ের নির্ধারিত কার্ডধারীদের মাঝে ডাল, চিনি, তেল ও ছোলার প্যাকেজ দেওয়া হতো। বড় বড় বস্তায় এসব মালামাল আসতো। পরে এখানে তা ওজন করে ছোট ছোট প্যাকেট করা হতো। পরে তা ডিলারদের মাঝে বরাদ্দ অনুসারে সরবরাহ করা হয়। এ সময় এসব খাদ্য পণ্য মেঝেতে পড়ে যায়। নষ্ট এসব পণ্য পরে বস্তায় ভরে রাখা হয়। ফলে ইচ্ছাকৃত কোনো কিছুই ছিল না।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যবসা প্রশাসন শাখা সূত্রে জানা যায়, জেলায় টিসিবির ডিলার ৪৩ জন। জেলায় কার্ডধারী ভোক্তার সংখ্যা ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮০ জন। দুই দফায় ৩ হাজার ৮৯০ টন মালামাল বরাদ্দ আসে। অদক্ষ শ্রমিক এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রায় ২ টন খাদ্য পণ্য নষ্ট হয়। এসব পচা পণ্য কী করা হবে তার সিদ্ধান্ত চেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম গত ৯ জুন টিসিবি’র চেয়ারম্যান বরাবর পত্র প্রেরণ করে। ২৩ জুন টিসিবির চেয়ারম্যানের দপ্তরের উপ সচিব শেখাবুর রহমান স্বাক্ষরিত ৩৭২ নং স্মারকে পত্রে জেলা প্রশাসককে কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিনহাজুল ইসলাম আহ্বায়ক। অপর দুই সদস্য হলেন টিসিবির রংপুর অফিসের সহকারী পরিচালক জামাল উদ্দিন এবং জেলা ত্রাণ বিষয়ক কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার। ১৮ জুলাই কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে খাওয়ার অযোগ্য এসব পণ্য ডিসপোজালের সুপারিশ করেন ১৯ জুলাই। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২ আগস্ট রাতে এসব মালামাল মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, রাতের অন্ধকারে মালামাল ডিসপোজাল করার ঘটনা অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দানা বাঁধছে সন্দেহ। কানাঘুষা চলছে এ লোকসানের দায় কে নেবে। এ সময় সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল কেউ উপস্থিত ছিলেন না। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা এসব খাদ্য পণ্য সময় মতো উদ্যোগ নেয়া হলে আর যাই হোক নষ্ট হতো না। কর্তৃপক্ষের অবহেলা উদাসীনতায় দরিদ্র মানুষের সহায়তায় সরকারের নেওয়া এ ভালো উদ্যোগটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/এআর)

মন্তব্য করুন