ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে ঢাকার দুই সিটির ২৭ ওয়ার্ড: সমীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৫২ | প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৩১

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ১৩টি আর দক্ষিণ সিটির ১৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব এলাকার ১২ ভাগ বাসা-বাড়িতেই এডিস মশার বিস্তার সবচেয়ে বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের করা যৌথ এক সমীক্ষায় এই চিত্র উঠে এসেছে। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ সমীক্ষার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, গত দুই বছরের তুলনায় এবছর দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম হলেও একেবারে কম নয়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। এসব এলাকার ১২ ভাগ বাসা-বাড়িতেই এডিস মশার বিস্তার সবচেয়ে বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক সমীক্ষা তুলে ধরে বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটির ১৩টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৪টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুতে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। সমীক্ষা চালানো বাসাগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৭৫৮টিতে নেগেটিভ আসলেও ৩৯২টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। শতকরা হারে এটি ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। মোট পজেটিভ আসা বাড়িগুলোর মধ্যে ৬৩টি ডিএনসিসির এবং ৯৬টি বাড়ি ডিএসসিসির।’

তিনি জানান, ডিএনসিসির ৪০টি ওয়ার্ডের ৪৮টি এলাকা এবং ডিএসসিসির ৫৮টি ওয়ার্ডের ৬২টি এলাকাসহ মোট ১১০টি এলাকার ৩ হাজার ১৫০টি বাড়িতে ১১ থেকে ২৩ আগস্ট এ সমীক্ষা চালানো হয়।

জরিপে দেখা গেছে, দুই সিটিতে পড়ে থাকা বা ফেলে রাখা ভেজা পাত্রে সবচেয়ে বেশি ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এছাড়াও ঘর বা ভবনের মেঝে প্লাস্টিকের ড্রাম বা প্লাস্টিকের নানা ধরনের পাত্রেও এই লার্ভা পাওয়া যায়। ঢাকা দক্ষিণ করপোরেশনের ২৬ শতাংশ এ ধরনের পাত্রে ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২২ শতাংশ পাত্রে মশার এই লার্ভা পাওয়া গেছে।

গবেষণায় এক হাজার ৩৩৭টি ভেজা পাত্র দেখেছিলেন জরিপকারীরা। যার প্রায় ২২ শতাংশে এডিসের লার্ভা মিলেছে। মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে ৮ নম্বর ওয়ার্ড (কমলাপুর ও মতিঝিল), ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড (নবাবপুর ও বংশাল) এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে (ওয়ারী ও নারিন্দা)।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘এখনো থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নিয়মিত বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে, ফলে এডিস মশার জন্ম হয়। ঢাকায় প্রচুর মানুষ ডাব খেয়ে থাকে, এগুলো অনেক সময় পরিষ্কার করা হয় না। এতে এডিস মশার প্রকোপ বাড়ে।’

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আমাদের কাজ না, আমরা সেবা দিয়ে থাকি। হয়তো সবসময় সবকিছু হয় না কিন্তু চেষ্টা করা হয়। তবে সবাইকে প্রতিরোধের কাজটা করতে হবে। এ জন্য আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। প্রথম দিকে যদি চিহ্নিত করা যায়, তাহলে চিকিৎসা দেওয়া অনেক সহজ হয়।’

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, ‘ডাম্পিং স্টেশনগুলোতে নজর দিতে হবে। ২০১৯ সালে যে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা বলার মত নয়। সিটি করপোরেশনকে অনেক দৌড়াতে হয়েছে। এ জন্য আমাদের নিজেদের সচেতনতার বিকল্প নেই। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলোর বাগানের ছাদে যাতে পানি না জমে সেটি কমিউনিটিকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘কোনো মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। অধিকাংশ রোগী ভর্তির প্রয়োজন না হলেও অনেকে হচ্ছেন। কিন্তু পুরো কাজের জন্য জনবল ও অর্থ লাগে। কোভিডকালীন যেসব রোগীকে আমরা সেবা দিতে পারিনি, তারা এখন বেশি আসছেন। ফলে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জের।’

(ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/এএ/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :