বোয়ালমারীতে নৌকাবাইচ ও মেলাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:০৬ | প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:২৬

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ ও গ্রামীণ মেলাকে কেন্দ্র করে আয়োজকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেলায় আগত দোকানিদের কাছ থেকে জোর করে রশিদের মাধ্যমে এ অর্থ আদায় করা হয়েছে।

জানা যায়, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ি গ্রাম সংলগ্ন কুমার নদে প্রতি বছর ২৬ সেপ্টেম্বর নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তেলজুড়ি বাজারে এক গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে ছোট বড় প্রায় তিন শতাধিক দোকানদারেরা এসেছেন। প্রতি বছর দোকানদারেরা জায়গার মালিককে অস্থায়ী দোকান বসানো বাবদ অল্প কিছু টাকা দিতেন। কিন্তু এবার আয়োজকরা জায়গার মালিককে টাকা তুলতে দেননি। আয়োজকদের পক্ষে অস্থায়ী দোকানদারেদের জানানো হয়েছে এবার দোকান স্থাপনের জন্য জায়গার মালিকদের নয়, আয়োজকদের টাকা দিতে হবে। অভিযোগ উঠেছে আয়োজকেরা দোকানদারেদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা তুলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকান মালিকেরা জানান, প্রতি বছরই তারা নৌকা বাইচ ও গ্রামীণ মেলা উপলক্ষে তেলজুড়ি বাজারে দোকান দেন। গত বছর তারা জায়গার মালিককে যে টাকা দিয়েছিলেন এ বছর আয়োজকরা তারা দ্বিগুণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এরচেয়েও বেশি টাকা তুলেছেন। দোকানদারেদের অনেকেই সংশয় প্রকাশ করে জানান, তাদের নাম পত্রিকায় ছাপা হলে আয়োজকেরা আগামীতে তাদের দোকান দিতে বাধা দিতে পারেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, 'তেলজুড়ি ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক নৌকাবাইচ মেলা-২০২২ চাঁদা আদায়ের রসিদ' শিরোনামে আয়োজকেরা চাঁদা আদায় করেছেন। আদায়কারীর স্বাক্ষরবিহীন রসিদের মাধ্যমে এ চাঁদা আদায় করেছেন। জহির নামের এক দোকানদারের কাছ থেকে ১১শ টাকা আদায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, এবার বিক্রি ভালো হয়নি। তাও আমাকে ১১শ টাকা দিতে হয়েছে। 'মামা-ভাগ্নে চানাচুর' নামের একটি চানাচুরের দোকানের মালিক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর তেলজুড়িতে মেলা উপলক্ষে যে জায়গায় দোকান দিতাম সেই জায়গার মালিককে কিছু টাকা দিতাম। কিন্তু এবার আয়োজকরা জায়গার মালিককে টাকা দিতে নিষেধ করায় আয়োজকদের দিয়েছি।

এ ব্যাপারে মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুকুল বলেন, মেলা পরিচালনা করতে বড় অংকের একটা টাকা খরচ হয়। আয়োজক কমিটি প্রতি বছরই ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে কিছু টাকা তোলে। পাশাপাশি জায়গার মালিকরা আলাদাভাবে জায়গার ভাড়া নেয়। শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এবার মেলা কমিটি রসিদের মাধ্যমে টাকা নিয়ে জায়গার মালিকদের অর্ধেক এবং মেলা কমিটি অর্ধেক টাকা নেবার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে তিনি টাকা তোলার ব্যাপারটা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার নিজের পকেট থেকে ষাট হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

নৌকা বাইচ ও মেলা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. আজিজুল আকিল ডেভিড সিকদার। রসিদের মাধ্যমে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগও দেয়নি।

(ঢাকাটাইমস/২৭সেপ্টেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :