দুধের সঙ্গে যেসব খাবার খেলে মারাত্মক বিপদ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ০৯:২৬

সুপার ফুড দুধ পুষ্টিগুণে ভরপুর। দুধ ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের উৎস। দুধে আছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্সসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দুধে আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ, যা শরীরের জন্য জরুরি। এতে প্রচুর ভিটামিন বি-১২ আছে, যা মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজন। দুধ শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া দেহের টিস্যু ও কোষ মেরামতের জন্য দারুণ উপকারী।

আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাছাড়া দুধ শরীরে শক্তিরও যোগান দেয়। শরীর সুস্থ রাখতে সব খাবারের পাশাপাশি দুধেরও বিকল্প নেই।

তবে খাবার খাওয়ার সময় আমরা বেশিরভাগ সময় কিছু ভুল করে বসি। যেমন কোন খাবারের সঙ্গে কি খাওয়া উচিত তা বুঝতে উঠতে পারি না। যার ফলে পড়তে হয় মারাত্মক বিপদে। তেমনি দুধের সঙ্গেও এমন কিছু খাবার আছে যা ভুলে খাওয়া উচিত নয়। এতে বাড়তে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

অনেকেই হয়তো জানেন না, প্রোটিনযুক্ত এই দুধের সঙ্গে এমন কিছু খাবার আছে যা মিশিয়ে খেলে বিপদে পড়তে পারেন। আয়ুর্বেদ বলছে, দুধের সঙ্গে যে কোনো খাবার মোটেও মেশানো যায় না। যে কোনো খাবারের সঙ্গে দুধ খেলে তা স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটাতে পারে।

ফল এবং দুধ একসঙ্গে খেলে হজম সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। কারণ বিপরীত চরিত্র হওয়ার কারণে হজম যে প্রক্রিয়া তা ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। ফলে বদ-হজম সহ নানাবিধ পেটের রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। জেনে নিন দুধের সঙ্গে যেসব খাবার খেলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে-

সকালের খাওয়ার পাতে অনেকেরই দুধ, কলা, পাউরুটি থাকে। ফিটনেস নিয়ে অধিক মাত্রায় সচেতন এমন অনেকেরই রোজের ডায়েটে থাকে দুধ, কলার মতো স্বাস্থ্যকর সব খাবার। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, দুধের সঙ্গে কলার এই যুগলবন্দি একেবারেই ভাল নয়। কারণ দুধের সঙ্গে কলা হজম করতে একটু সমস্যা হয়। বদহজম হতে পারে। তাই এই দু’টি খাবার একসঙ্গে না খেলেই ভাল।

দুধের সঙ্গে টকজাতীয় কোনও ফল খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফল দুধের সঙ্গে খেলে বুকজ্বালা, পেটব্যথা, অম্বল, হতে পারে। এই জাতীয় ফলে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড দুধের সঙ্গে মিশে শারীরিক নানা সমস্যার জন্ম দেয়। তাই টক ফলের সঙ্গে দুধ কোনও ভাবেই খাওয়া উচিত নয়।

দুধ খাওয়ার আগে কিংবা পরে মুলা খাওয়া ঠিক নয়। মুলো শরীরে গ্যাস উৎপন্ন করে। সেই কারণে মুলো খেলে গ্যাস হয়। দুগ্ধজাত খাবার খেলেও গ্যাস হয় এমন উদাহরণও কম নয়। তাই এই দু’টো খাবার একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। দুধ এবং মুলো একসঙ্গে খেলে বমি, বুকেব্যথা, পেটে ব্যথার মতো কিছু শারীরিক সমস্যার জন্ম হতে পারে।

দুধের সঙ্গে মেলন জাতীয় কোনও ফল খাওয়া ঠিক নয়। ফুটি হল এই গোত্রীয় ফল। ফুটি এমনি খেলেই নানা সমস্যা দেখা দেয়। তার সঙ্গে যদি জুটি বাঁধে দুধ, তা হলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। দুধে থাকা ফ্যাট ফুটির সংস্পর্শে এসে শারীরিক কিছু সমস্যার জন্ম দেয়। তাই দুধের সঙ্গে এই ধরনের ফল এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

কলা, চেরি দুধের সঙ্গে মিশিয়ে কখনই খাবেন না বলে পরামর্শ দিচ্ছেন আয়ুর্বেদিকরা। পাশাপাশি দুধের সঙ্গে কমলা, লেবু, তেঁতুল, আমলা, গ্রিন আপেল, তাল, আনারস টক জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।

আয়ুর্বেদিকদের মতে ডিম, মাংস, মাছ, খিচুড়ি, বিনস, মুলা খাওয়া একেবারে উচিত নয়। এতে প্রচুর পরিমাণে অম্বল ও গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তবে মধু ও গুড় মিশিয়ে দুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো।

দইয়ের সঙ্গে দুধ মেশালে তা কেমিক্যাল রিএকশ্যান করে দুধ কে দই-এ পরিনত করে। এই প্রক্রিয়া আমাদের পেটেও যখন এই দুটি জিনিস একত্রে সেবন করি এরফলে পাচন তন্ত্র খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

অনেক সময় ত্বকে সাদা দাগ দেখা যায়। দুধ খাওয়ার আগে বা পরে মাছ মাংস খেলে এরকম হয়ে থাকে। আর এছাড়া প্রবল অ্যসিডের সুযোগ থাকে । দুটি খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যা পাচন তন্ত্রে চাপ পরে যার ফলে পরবর্তীতে সমস্যা দেখা যায়।

আপনি যদি সালাদে পেয়াজ ব্যবহার করেন বা খাদ্যে বেগুনের কোনো কিছু থাকে তবে সেই খাদ্য গ্রহণের দু ঘন্টা পরই দুধ খাবেন। এই দুটি এক সঙ্গে সেবন করলে ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়।

দুধ খাওয়ার আগে বা পরে টক জাতীয় ফল বা আচার কিছু খাবেন না। সঙ্গে নোনতা জাতীয় খাবার ফাস্ট ফুড চিপস্ খাবেন না। খেতে হলে এক ঘন্টা বিরতি দিয়ে তবেই খাবেন।নাহলে কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন হয়ে শরীরে ক্ষতি করবে।

ভারী খাবার পরে কখনো দুধ খাবেন না। দুধ নিজেই খাদ্যের সমান। তাই খাওয়ার পর আবার দুধ পান করলে শরীরের জন্য তা অতিরিক্ত হয়ে থাকে । দুধ সাধারণত পাচন করতে সময় লাগে তাই খাবার পর দুধ খেলে খাবার পাচন প্রক্রিয়া দূর্বল হয়ে পরে, অ্যাসিড হয়ে যায়, পেট ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।

যদি খাবারের পরই দুধ খেতে হয় তবে দুটোর মধ্যে সামঞ্জস্য করে নিন অর্থাৎ দুটি খাবারের মাত্রা অর্ধেক করে নিন। উদাহরণ হিসেবে যদি আপনি চারটি রুটি সাধারণত খেয়ে থাকেন তাহলে সেখানে দুটি রুটি খান আর দুধ খান হাফ গ্লাস।

দুধ এবং মাংস একসঙ্গে খেলে শরীরের পক্ষে পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ এই দুটি খাবারকে একই সময় হজম করা বেশ কষ্টকর হয়ে পরে। ফলে ঠিক মতো হজম না হওয়ার কারণে পেট খারাপ সহ নানাবিধ শরীরিক সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের শরীরের হজম ক্ষমতা এই দুটি খাবারকে কোনও মতেই কিন্তু একসঙ্গে ভাঙতে পারে না। কারণ দুটিই একই চরিত্রের খাবার। দীর্ঘদিন ধরে কেউ যদি দুধের সঙ্গে মাংস খেয়ে থাকেন তাহলে এক সময়ে গিয়ে তার হজম ক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।

দুধ এবং মাছ একসঙ্গে খেলে শরীরে "এমা" নামে এক ধরনের ক্ষতিকর টক্সিনের পরিমাণ খুব বেড়ে যায়, ফলে শরীরের ভিতর থেকে বিকল হতে শুরু করে। আয়ুর্বেদ মতে শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার অর্থ হল বিষের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, যা একাধিক রোগকে ডেকে আনার পক্ষে যথেষ্ট। মাছ এবং দুধ একসঙ্গে খেলে মারাত্মক রকমের অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মাছ এবং দুধ একসঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে রক্তচলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটে। তাই ভুলেই এই দুটি খাবার একসঙ্গে খাবেন না।

লবণ এবং দুধ একে অপরের থেকে একেবারেই আলাদা চরিত্রের খাবার, যা একসঙ্গে খেলে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হয় না। দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়াম আর লবণে উপস্থিত সোডিয়াম একসঙ্গে মিশলে শরীরের অন্দরে নানা ক্ষতিকর পরিবর্তন হতে থাকে, যা সুস্থ থাকার পক্ষে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

(ঢাকাটাইমস/২৭ নভেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :