ডিসেম্বরেই স্বৈরতন্ত্রকে পরাজিত করতে হবে: শামসুজ্জামান দুদু

বর্তমান শাসক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ‘বাংলাদেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অপরাজেয় বাংলাদেশ এর উদ্যোগে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সামনে ডিসেম্বর মাস। ডিসেম্বর হচ্ছে গণতন্ত্র, স্বাধীনতার বিজয়ের মাস, স্বৈরতন্ত্রকে পরাজিত করার মাস, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কার্যকরী মাস। তাদেরকে এই ডিসেম্বরে পরাজিত করতে হবে। পরাজিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র পুনর্জীবিত করতে হ‌বে।’

‘বিএনপির আন্দোলন শুধু বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নয়। এ আন্দোলন এদেশের জনগণের মুক্তির আন্দোলন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনে দেশের সকল জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

‘দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছে, সেই আন্দোলনকারীদের সাত থেকে আটজনকে এ সরকার গুলি করে হত্যা করেছে’ উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা এই হত্যার বিচার দাবি করছি। আমরা দাবি করছি, পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। পার্লামেন্ট ভেঙে দিন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করুন। এটাই আমাদের দাবি।’

ঋণখেলাপি হওয়ার দায়ে কারাবন্দি হওয়া কৃষকদের কথা উল্লেখ করে কৃষকদলের সাবেক আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এদেশের ১৮ জন কৃষক ২৪ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। তাদেরকে জেলে ভরা হয়েছে। অথচ এ দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। যারা পাচার করেছে এখন পর্যন্ত শুনি নাই তাদের নামে মামলা হয়েছে, তদন্ত হয়েছে বা গ্রেপ্তার হয়েছে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সরকারি ব্যাংক আগেই লোপাট হয়েছে। এখন শুনছি বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক যেটা লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল। গত এক মাসে সেই ব্যাংক থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। যাদের নাম নাই, ঠিকানা নাই তাদের নামে এ টাকা লুটপাট করা হয়েছে।’ ‘বাংলাদেশে এখন লুটেরাদের সরকার ক্ষমতায়, এদেশে লুটের উৎসব চলছে’ বলে মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) লুট করার জন্য ক্ষমতায় এসেছে। পার্লামেন্টে এসেছে লুট করার জন্য। এদের যদি পতন করতে না পারি, তাহলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।’

২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচন এদেশের জনগণের জন্য লজ্জাজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচনে আমাদের যে ঐতিহ্যবাহী পুলিশ ছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল, তাদের একটা অংশ, একটা গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে পুলিশ বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। প্রশাসনকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে এই অবৈধ সরকার। যারা (পু‌লিশ) এই অপকর্ম করেছে তারা জানে না ’৭১ সালে পাকহানাদারের বিরুদ্ধে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং এই যুদ্ধের অন্যতম সিপাহসালার ছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার দুই সন্তান তখন জেল খেটেছে। স্বাধীনতার জন্য এত কম বয়সে জেল খাটা তারেক রহমান ছাড়া আর অন্য কেউ আছে এটা খুঁজে বের করা খুবই কঠিন।’

অপরাজেয় বাংলাদেশের সহসভাপতি কে এম ওয়া‌জেদ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব‌্য রা‌খেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, জিনাফ এর সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, তাঁতীদলের যুগ্ম মহাসচিব কাজী মনির প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৮নভেম্বর/একে/এফএ)