গুচ্ছকবিতা

কাজী রাসেল
 | প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৫

মৃত্যুর ঘোষণা

আমি একদিন বৃদ্ধ হবো

তখন না হয় নিজেকে শুধরে নেব

এসব ভেবেই পাপের গলিতে

আঁকা-বাঁকা অশুভ পথে ঘুরছি!

বৃদ্ধ হওয়া_ আর হলো না!

পাপের উঁচু পাহাড়

ঢলে পড়েছে ক্রমান্বয়ে!

মৃত্যুর সদৃশ ঘুম

অথচ আজকাল ঘুমাতে ভয় হয়!

মৃত্যুর আগেই

যদি ঘুমেই মরে যায়!

আর যদি না দেখি ভোরের সূর্য।

আমার শ্রমে ঘামে অর্থ উপার্জন করা

স্থানী সম্পত্তি , উঁচু দালান,

নকশার তৈরি সৌখিন আসবাবপত্র

অযাচিত ভাবে নোংরা ডাস্টবিনের পোকামাকড়ের বসবাস হইবে।

আমার অট্টালিকায়

রং পেন্সিলে আঁকা শৈল্পিক

কারুকাজ কালচে বিবর্ণ

কেউ চেয়ে দেখবে না সেদিন!

প্রজন্মের শাখানদী

দীর্ঘতম বটবৃক্ষের মতো

ছায়া দেবে আদরের সন্তান

অথচ আমাকে মনে রাখবে না!

যেভাবে আমি মনে রাখিনি!!

বড়আম্মা, চাচা, দাদা,

দাদার বাবার কথা!

পূর্বপুরুষদের মতো আমাকে ও

ভুলে যাবে_আমার অস্থিসন্ধি!

জীবনবৃত্তান্তের ফলাফল

ধীরে ধীরে মুচে যাবে।

মগজে মননে!

মৃত ব্যক্তির আত্নাকে

জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলছে_

মমতা, সহানুভূতি, আদরযত্ন

কোনোদিন ভুলব না

অথচ আমার মৃতু্র কথা ভুলে যাবে!

এবার দেখুন প্রিয় সমাবেশ।

নিজের অঙ্গীকার কতটুকু মনে পড়ে?

মৃত বাবা, মায়ের কথা?

নিশ্চয়, বাবার ঘামের টাকায়

আরামকেদারায় ঝিমাচ্ছেন,

নতুবা নিজের খেয়ে পরের গান করছেন সারাদিন

শুভেচ্ছার স্বাগতম, মঞ্চ কাঁপিয়ে।

সোনালি ধান

মৃদু ঘাসে লেপ্টে আছে

আমার কোমল মাটির হৃদয়।

সতেজ নির্মল বাতাসে দোল খায়,

কৃষকের সোনালী ধান।

পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে

পাতা রহস্যময় উদ্ধৃত হওয়ায়

জলরং মিশে গেছে সবুজ ঘাসে।

লাউ এর ডগা বেয়ে বেয়ে

পর্যাপ্ত স্থান_ পদোন্নতি করেছে।

শাখাপ্রশাখার কেন্দ্রবিন্দু ;

ভিজে গেছে শিশিরের কণা।

কুয়াশার অস্পষ্ট ছায়ায় মিশে গেছে

জলের ভেতর পদ্মফুল।

মৌমাছি ফুলে ফুলে মধু খুঁজে গেল সারাদিন

কোথাও হলো না মধু আহরণ।

পুষ্পরস

তোমাকে খুঁজতে গিয়ে খুঁজে পেলাম

অযত্নে অবহেলায়

রাস্তার পাশে বেড়ে উঠা

দফেদফে ভাঁটফুল।

অন্য ডাল থেকে এসে

নিবিড় ছাঁয়ায়-

দুটো মৌমাছি গভীর নিমগ্নে

চুষে নিচ্ছে পুষ্পরস।

পাখির দরজা খুলতেই

কোকিল আমাকে দেখে-

কী ভেজান সুরে ডাকছে- কুহু কুহু।

সমান তালেই ঝিঁঝিঁপোকার তুমুল চেঁচামেচি।

হাঁটাহাঁটি পা পা ভুলে গেলাম

তোমার বাড়ির ভাঙা

স্টেশন পথ!

স্মৃতির মিনারে আটক হতেই

মনে পড়ে শৈশবস্মৃতি।

দীর্ঘতম কাঁচামাটিয়া নদীর

নালা থেকে কিছুটা ধরে।

আমার আর তোমার সোহাগী পাঠশালা।

একটি কোকিল সঙ্গীবিহীন

একটি কোকিল সঙ্গী ছাড়া উড়ছে

মসৃণ পায়ের নোঙর ছিঁড়ে

কোথাও মেলেনি প্রেমের আহ্বান!

বাড়ি ফেরার সরু পথ দেখা যায় না

দূরের পথটা কেবল অচেনা

সন্ধান নেই মানবতার!

আকাশের সীমাহীন কান্নায়

ভিজে গেল শুকনো ঠোঁট!

ভেসে গেল স্মৃতির মিনার

তার চেয়ে বড় অভিমানী চোখ

অবহেলায় আলগোছে ভেঙে যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :