ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের চাটাই দিয়ে পারাপার
জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় গত পাঁচ বছর ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও শয়তানখালী খালের ওপর নির্মিত সেতুটি দিয়ে স্বাভাবিক ছিল মানুষজনের চলাচল। দুর্ঘটনা এড়াতে একেবারেই বন্ধ করা হয়েছে তাও গত তিন মাস পূর্বে। কিন্তু আজও সেতু নির্মাণের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। ফলে বিকল্প হিসেবে সেতুটির পাশে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের ছাটাই দিয়ে সেতু। প্রতিদিনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হাজার হাজার মানুষ চলাচল করতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে।
ফলে যেকোনো সময় প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও সেতুটি নিয়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে সবার মধ্যে।
এমনই এক সংকটজনক অবস্থা বিরাজ করছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি সদরের মধ্যবাজারে অবস্থিত শয়তানখালী খালের ওপর নির্মিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি অর্থায়নে প্রায় চার যুগ পূর্বে শয়তানখালী খালের ওপর নির্মাণ করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। গত পাঁচ বছর ধরেই এই সেতুটি জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়াসহ সেতুটির পাটাতন দেবে যাওয়া ছাড়াও পিলারসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। গত তিন মাস পূর্বে ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুটির সংযোগ সড়কের দুই মুখে বাঁশের বেষ্টনি দিয়ে মানুষের চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে সেতুর দক্ষিণ পাশে নিজস্ব অর্থায়নে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছেন ধর্মপাশা সদর ইউপি চেয়ারম্যান জুবায়ের পাশা হিমু। পরিবর্তীতে এখানেই বাঁশের চাটাই দিয়ে সেতু নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজনকে।
সেতুটি ভেঙে দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সাজিদুর রহমান জানান, শয়তানখালী সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকার পরও চলাচল করছিল এতে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকায় সেতুটি দিয়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন বাঁশের ছাটাই দিয়ে তৈরি সেতু দিয়ে চলাচল করছে সেটিও ঝুঁকি পূর্ণ তাই জনস্বার্থ নতুন সেতু নির্মাণ করা হলে জনদুর্ভোগ লাগব হবে।
সাঁকো দিয়ে চলাচলকারী বাবলু মিয়া, আমিনুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, এই সেতুটির দুই পাশে রয়েছে এলজিইডির সড়ক। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় এই বাঁশের ছাটাই দিয়েই ৭-৮ গ্রামের ১০ হাজারের অধিক মানুষ চলাচল করতে হচ্ছে চরম ঝুঁকি নিয়ে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ধর্মপাশা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহাব উদ্দিন জানান, সেতুটির অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় আমরা সেখানে নতুনভাবে সেতু নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে সেতুটির টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। খুব শিগশিরই এই বিষয়ে সমাধান হবে।
ধর্মপাশা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুবায়ের পাশা হিমু জানান, দীর্ঘদিন ধরে শয়তানখালী খালের উপর নির্মিত সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকার পরও এর ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করায় প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। তাই সেতুটি দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এখন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণ করা হলে জনদুর্ভোগ লাগব হবে।
ধর্মপাশার ইউএনও সীতেশ রঞ্জন সরকার বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/এসএ)