শালবনে আগুন, নজর নেই বনবিভাগের

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ মার্চ ২০২৩, ১৬:২৮
অ- অ+

গাজীপুরের শ্রীপুরে সিমলাপাড়া এলাকায় সংরক্ষিত বনে প্রতিনিয়ত আগুন জ্বলছে। আগুন লাগার স্থান থেকে স্থানীয় বিট অফিসের দূরত্ব মাত্র ৫০ গজ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার সারাদিন ধরে আগুন জ্বললেও বন বিভাগের কোনো কর্মকর্তাদের সেখানে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে স্থানীয় বিট কর্মকর্তা শামসুজ্জামানকে ফোন করলে তিনি আগুন নেভানোর মতো লোক আমাদের নেই বলে দায় এড়িয়ে যান।

চারদিকে ছোট ছোট টিলায় সবুজ গাছপালাসমৃদ্ধ শাল-গজারির বিখ্যাত জেলা গাজীপুর। টিলাবেষ্টিত শালবাগানই যুগের পর যুগ গাজীপুরের ভাওয়ালের অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। হাজারো উদ্ভিদ ও প্রাণী পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে শাল-গজারিগাছ। কিন্তু প্রতিবছর শীতের শেষে বসন্তের লগ্নে রহস্যময় আগুনে শাল-গজারিগাছ, বিভিন্ন প্রজাতির চারা ও বনের নানা ধরনের প্রাণী, পোকামাকড় পুড়ে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে । আগুন নিয়ন্ত্রণে বন বিভাগ সচেতনতায় সভা সেমিনার করলেও আগুনের লাগাম টানতে পারেনি এবারও।

বন বিভাগের তথ্য মতে, প্রায় ৬৫ হাজার একর বনভূমি রয়েছে গাজীপুরে। জেলার মধ্যে ভাওয়াল, শ্রীপুর, কালিয়াকৈর, কাঁচিঘাটা, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ অফিসের মাধ্যমে এসব বনভূমির নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। শিল্পায়ন, বন উপড়ে বনভূমি দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণের কারণে গাজীপুরের বনাঞ্চল এমনিতেই হুমকির মধ্যে রয়েছে কয়েক দশক ধরে। বন বিভাগের নজরদারির অভাবে বেপরোয়া এখন স্থানীয় বন দস্যুরাও।

শীতের শেষে শালগাছের পাতা ঝরে যায়। বসন্তের শুরুতে প্রকৃতি জেগে ওঠার সময় বনে আগুনের যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে বড় গাছগুলো কোনোমতে টিকে থাকলেও মাটি ফেটে তেড়ে উঠা ছোট হাজারো উদ্ভিদ ও কান্ড থেকে গজানো শালগাছ পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও নানা প্রাণ। সঙ্গে বাতাসে কার্বণের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনে যখন নতুন শাখা বের হয়, তখনই বন উজাড় করে তা দখলের জন্য রাতের আঁধারে আগুন দেয় একটি চক্র। তাদের উদ্দেশ্য, বনের গাছপালা পুড়ে বন পরিষ্কার করে তা দখলে নেওয়া। এছাড়াও এ আগুনের ফলে চুরি হওয়া গাছের মূলও পুড়ে ফেলা। স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় বন পরিষ্কার করা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান ইউসুফ খান বলেন, অসাধু এ চক্র বনের ভেতর আগুন দিয়ে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এতে বনের ভেতর থাকা হাজারো প্রাণীদের বসতের স্থান ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। কীটপতঙ্গ, বন্য প্রাণী ও পাখির আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভাওয়াল বনের ইতিহাসের সঙ্গে মিশে থাকা কিছু বিচিত্র লতাগুল্ম নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এ ধরনের আগুনে। এছাড়াও আমাদের বাতাসে কার্বণের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম বলেন, বনে আগুন লাগার ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা প্রয়োজন। আমাদের জনবল সংকটে নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর পরও আমরা বনের আগুনের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

(ঢাকাটাইমস/৫মার্চ/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিষিদ্ধ হলো আওয়ামী লীগ
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরে ফের বিস্ফোরণ
বিএনপির কাছে সবার আগে বাংলাদেশ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব: মুন্না
শাহবাগ ছেড়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে আন্দোলনকারীরা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা