বরিশালে দূরপাল্লার ১৫ বাস কাউন্টার বন্ধ করল বাস মা‌লিক গ্রুপ

ব‌রিশাল ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৩, ১২:৫৬ | প্রকাশিত : ০৭ মার্চ ২০২৩, ১১:১২

বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টা‌র্মিনাল নথুল্লাবাদ এলাকায় থাকা দূরপাল্লার রু‌টে নামিদা‌মি ১৫টি পরিবহন কোম্পানির কাউন্টার বন্ধ ক‌রে দি‌য়ে‌ছেন ব‌রিশাল জেলা বাস মা‌লিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কি‌শোর কুমার দে। এ‌তে ভোগা‌ন্তি‌তে প‌ড়ে‌ছেন ক‌য়েকশ যাত্রী।

বরিশাল সি‌টি মেয়র ও পু‌লিশ ক‌মিশনা‌রের নি‌র্দেশে কাউন্টারগু‌লো ব‌ন্ধ ক‌রা হ‌য়ে‌ছে ব‌লে জানান বাস মা‌লিক গ্রু‌পের সাধারণ সম্পাদক। তবে পু‌লিশ ক‌মিশনার বল‌ছেন, এমন কো‌নো নি‌র্দেশনা কাউকেই দেওয়া হয়‌নি। সোমবার সন্ধ‌্যায় এসব কাউন্টারগু‌লো বন্ধ ক‌রে দেওয়া হয়।

নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের বাইরে ঢাকাগামী গ্রীনলাইন, ইউনিক, এনা, শ্যামলী, সোহাগ, টাইম ট্রাভেলস, ইউরো কোচ, সাকুরা, হানিফ, মিজান, বিএমএফ ও ইলিশ পরিবহনের কাউন্টার রয়েছে। বা‌কি কাউন্টারগু‌লো বন্ধ রাখ‌লেও জেলা বাস মা‌লিক গ্রুপ প‌রিচা‌লিত বিএমএফ ও ই‌লিশ প‌রিবহ‌নের কাউন্টার বন্ধ ক‌রা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শ‌র্তে এক কাউন্টার ম‌্যা‌নেজার ব‌লেন, ‘বাস মা‌লিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কি‌শোর কুমার দে টা‌র্মিনা‌লের বাই‌রে থাকা কাউন্টারগু‌লোতে নির্ধারিত অং‌কের চাঁদা দাবি ক‌রে‌ছি‌লেন। তা না পে‌য়ে মেয়র সা‌দিক আব্দুল্লাহ ও পু‌লিশ ক‌মিশনার সাইফুল ইসলামের নাম ব‌্যবহার ক‌রে কাউন্টার বন্ধ ক‌রে দি‌য়ে‌ছেন।’

গ্রীনলাইন পরিবহনের ব্যবস্থাপক হাসান সরদার বাদশা বলেন, ‘সন্ধ‌্যার দিকে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে’র নেতৃত্বে মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা এসে প্রথমে যাত্রীদের বের করে। পরে তাদের কাউন্টারের মধ্যে রেখে তালাবদ্ধ করার চেষ্টা করে। তখন অনুরোধ করে তারা বেরিয়ে পড়ার পর মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা কাউন্টার বন্ধ করে দিয়েছেন।’

বাদশা বলেন, ‘গ্রীন লাইনের যাত্রীরা সাধারণত প্রথম শ্রেণির যাত্রী। টার্মিনালে তাদের বিশ্রাম নেওয়া, নামাজ আদায়, বসাসহ বাথরুম সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই। মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের চাপে তারা বাধ্য হয়ে যাত্রীদের টার্মিনালে পাঠাচ্ছেন। এতে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।’

তিনি আরও জানান, ‘প্রতিদিন টার্মিনালের বিপরীতে তাদের কাউন্টারের সামনে থেকে ১৪-১৫টি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এতে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ যাত্রী থাকে। এসব যাত্রীদের টার্মিনালের কাউন্টারে ভোগান্তি থেকে রক্ষায় সুবিধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নগরীর গড়িয়ার পাড় এলাকায় নতুন টার্মিনাল এখনো ব্যবহার উপযোগী হয়নি। সব বাস যদি টার্মিনাল থেকে ছাড়তে হয়, তাহলে ভোগান্তির অন্ত থাকবে না। তাই বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করার প্রয়োজন ছিল।’

ইউনিক পরিবহনের কাউন্টার ইনচার্জ মো. ইউনুস বলেন, তাদের বাস কুয়াকাটা থেকে ছেড়ে আসে। এসব বাস নথুল্লাবাদ বিআরটিসি বাস ডিপোর পাশে থামিয়ে যাত্রী নেয়। তিনি বলেন, ‘আমা‌দেন কোনো বাস কাউন্টারের সামনে রাখা হয় না। টার্মিনালে বাস প্রবেশ ও বের হতে সমস্যা। কিন্তু মালিক সমিতির নেতারা এসে কাউন্টার বন্ধ করে দিয়েছে।’

ইউনিক পরিবহনে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানো যাত্রী নগরীর জর্ডান রোড এলাকার বাসিন্দা সজিব আলম বলেন, ‘গাড়ি আসবে ১১টায়। কিন্তু কাউন্টার তালাবদ্ধ থাকা সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি।’

ব‌রিশাল জেলা বাস মা‌লিক গ্রু‌পের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, ‘মেয়র সের‌নিয়াবাত সা‌দিক আব্দুল্লাহ ও পুলিশ ক‌মিশনার সাইফুল ইসলাম স‌্যার নথুল্লাবাদ এলাকায় যানজট নিরসনে সড়কের পাশের সব কাউন্টার বন্ধ করতে বলেছেন। কারণ এখানে যানজট হলে মেয়রের বদনাম হয়। সেটা করতে দেওয়া হবে না। কা‌রেও কা‌ছে চাঁদা দাবির কোনো বিষয় নেই।’

তবে দুই ছাত্রলীগ নেতার পরিচালনাধীন ইলিশ ও বিএমএফ পরিবহনের রাস্তার পাশের কাউন্টার বন্ধ না করার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি কিশোর কুমার দে।

এ‌দি‌কে ব‌রিশাল মে‌ট্রোপ‌লিটন পু‌লিশ ক‌মিশনার সাইফুল ইসলাম ব‌লেন, ‘কো‌নো বাস কাউন্টার ব‌ন্ধের জন‌্য কাউ‌কেই নি‌র্দেশনা দেওয়া হয়‌নি। আমা‌দের নি‌র্দেশনা ছি‌ল বেপ‌রোয়া গ‌তি‌তে বাস চালা‌নো যা‌বে না এবং সড়‌কে অযথা পা‌র্কিং ক‌রে যানজট সৃ‌ষ্টি করা যা‌বে না। এছাড়া অন‌্য কো‌নো বিষ‌য়ে আ‌মরা কিছুই ব‌লি‌নি।’

(ঢাকাটাইমস/৭মার্চ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :