মাহির যত বিতর্কিত কাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৮ মার্চ ২০২৩, ১৬:২১
অ- অ+

পুলিশের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দর থেকে মাহিকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। একই মামলার আসামি তার স্বামী রকিব সরকার পলাতক রয়েছেন।

এর আগে মাহি তার স্বামীর শোরুম ভাঙচুর ও দখলের অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে। এরপর শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাতে মাহি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে জিএমপির বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।

এ ছাড়া জমি দখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন।

মাহি স্বামী রকিব সরকারের সঙ্গে ওমরাহ হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গিয়েছিলেন। মাহির সঙ্গে দেশে ফেরেননি রকিব। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে শুরু থেকেই নানা বিতর্কে মোড়া এই নায়িকার ক্যারিয়ার। সেসব বিতর্কের মধ্য থেকে বিশেষ কয়েকটি বিতর্ক নিয়ে ঢাকাটাইমসের এই প্রতিবেদন।

একাধিক বিয়ে ও সম্পর্ক:

২০১৬ সালে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে বিয়ে করেন মাহি। চার বছরের বেশি সময় সংসার করার পর ২০২১ সালের জুনে তারা ডিভোর্সের ঘোষণা দেন। ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে নায়িকা বিয়ে করেন গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক রাকিব সরকারকে। বর্তমানে তার সঙ্গেই সংসার করছেন। এছাড়া গুঞ্জন আছে অপু ও রাকিবের আগে শাহরিয়ার ইসলাম শাওন নামে এক যুবককে বিয়ে করেন মাহি। তার আগে, ২০১৫ সালের ১৫ মে ম্যারেজ রেজিস্টারের মাধ্যমে শাওন নামের একজনকে বিয়ে করেন মাহি। ২০১৬ সালে অপুকে বিয়ের পর শাওনের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি আলোচনায় আসে। শাওনের সঙ্গে মাহির ছবিও ফাঁস হয়। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা মোকদ্দমাও হয়।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে প্রেমের সম্পর্ক নিয়েও শিরোনামে থেকেছেন মাহি। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ, প্রযোজক আরশাদ আদনানসহ, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনেরই বেশ কয়েকজনের প্রেমের সম্পর্ক জোড়ালোভাবে শোনা গেছে।

মাহির কারণে মন্ত্রিত্ব খুইয়েছিলেন ডা. মুরাদ:

২০২১ সালের ডিসেম্বরে মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁসকে কেন্দ্র করে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারাতে হয়েছিল ডা. মুরাদ হাসানকে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় বেশ জলঘোলা হয়েছে। ফাঁস হওয়া ওই কথোপকথনে ডা. মুরাদ অশ্লীল ভাষায় মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বলেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে ডা. মুরাদের শাস্তির দাবি ওঠে। এরপর দলীয়ভাবে মুরাদকে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া একই ইস্যুতে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সেসময় গণমাধ্যমে মুরাদ বলেছিলেন, রাজনীতি করলে শত্রুতা থাকবেই। কে কীভাবে ষড়যন্ত্র করেছে, এটা বলতে পারবো না। আমি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।

আছে স্ক্যান্ডাল বিতর্ক:

২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি মাহি তার ফেসবুকে ‘অগ্নি-২’এর পর আর কোনও ছবিতে অভিনয় করবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে আমেরিকা পাড়ি জমান। এরপর মে মাসের ৫ তারিখে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একটি অশ্লীল ভিডিও। ভিডিওর মেয়েটি মাহি বলে অভিযোগ ওঠলে তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। সেসময় ওই স্ক্যান্ডালের দোহাই দিয়ে প্রযোজনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিষিদ্ধও ঘোষণা করে এই নায়িকাকে।

শুটিংয়েও লাগামছাড়া মাহি:

শোবিজের কাজ নিয়েও এই নায়িকার নামে আছে একগুচ্ছ অভিযোগ। শুটিংয়ে প্রায় ডজনখানেক লোকজন নিয়ে যাওয়া, শিডিউল ফাঁসানোর মতো অনেক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আছে। গত বছরের আগস্টে মাহির বিরুদ্ধে অপেশাদার আচরণেরও অভিযোগ করেন ‘আশীর্বাদ’ সিনেমার প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস।

জেনিফার জানিয়েছিলেন, ওই সিনেমার প্রোডাকশন বয়ের কাছে নারকেল তেল চেয়েছিল মাহি। ওই সময়ে ছেলেটি অন্য কাজে থাকার কারণে নায়িকাকে তেল দিতে দেরি হয়। এতে মাহি বেঁকে বসে। ওই ছেলেকে বাদ না দিলে মাহি শুটিং করবে না বলে জানায়। পরে বাধ্য হয়ে ছেলেটিকে বাদ দিই। এছাড়া সিনেমার মুক্তির সময়ে প্রচারণার সময়য়েও সক্রিয় ছিলেন না মাহি।

এর আগেও অনেক প্রযোজক-পরিচালক বিভিন্ন সময়ে মাহির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। ২০১৯ সালে ‘অবতার’ সিনেমার পরিচালক মাহমুদ হাসান শিকদার মাহির বিরুদ্ধে ‘টাকা হাতিয়ে’ নেয়াসহ নানা ধরনের অভিযোগ করেন। শুটিংয়ে মাহি ১০ জনের টিম নিয়ে যেতেন। যার খরচ বহন করতে হতো প্রযোজককে। এ ছাড়াও প্রযোজক-পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জেমী মাহির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে নায়িকাকে ‘বস্তির মেয়েদের’ সঙ্গে তুলনা করে ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।

এর আগে ২০১৮ সালে ‘ও মাই লাভ’ সিনেমার পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মাহির বিরুদ্ধে শিডিউল ফাঁসানোর অভিযোগ করেন পরিচালক সমিতিতে। এর প্রেক্ষিতে সাবেক বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, প্রযোজকসহ চলচ্চিত্রের কয়েকজনের উপস্থিতে বিষয়টির সমাধান হয়। অতীতে ফিরে গেলে মাহির বিরুদ্ধে এমন আরও অনেক অভিযোগ পাওয়া যাবে।

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/এলএম/এসএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ফের এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে ককটেল বিস্ফোরণ
বন্যার্তদের পাশে বিজিবি: ফেনীতে ২০০ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
বৃহস্পতিবারের কুমিল্লা বোর্ডের  এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের জমিসহ বাড়ি জব্দ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা