দেশের পর্যটন খাতকে অনেক বেশি উচ্চতায় নেওয়ার সুযোগ আছে: স্পিকার
দেশের পর্যটন খাত অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমানে পর্যটন খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শতকরা তিন ভাগ অবদান রাখছে। আমরা মনে করি যে এই খাতকে আরো অনেক বেশি উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অপার সুযোগ এবং সম্ভাবনা আমাদের আছে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্ককে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত ‘মুজিব'স বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।
ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আশা করি আজকে যেমন ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে, তেমনি আরও অনেক ভিন্নধর্মী উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরো বেশি সবার কাছে আকর্ষণীয় ও পরিচিত হয়ে উঠবে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র সম্পূর্ণ নিরাপত্তার উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাঙালি বিশ্বব্যাপী পরিচিত তার ভোজন রসিক গুন ও আত্মীয়তার কারণে।’
জাতীয় সংসদের স্পিকার বলেন, ‘প্রতি বছর বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ব থেকে যেসব পর্যটক আসেন তারা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে পরখ করতে ভালোবাসেন। সেই পুরনো দিনের খাবারের যে ঐতিহ্য খুব ভালোভাবে তা উপভোগ করেন।’
পর্যটন শিল্প বিশ্বের এক অন্যতম অর্থনৈতিক খাত উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের জন্য তরুণদের ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে পর্যটন একটি কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বিশ্বকাপে করোনার অতিমারীর কারণে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের পর্যটন খাত কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে অতিমারীর সংকট কাটিয়ে পর্যটন খাত নতুন উদ্যানে হাটা বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে এবং জোরালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।’
‘বাংলাদেশের পর্যটন অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। বর্তমানে পর্যটন খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শতকরা তিন ভাগ অবদান রাখছে। আমরা মনে করি যে এই থাকলে আরো অনেক বেশি উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অপার সুযোগ এবং সম্ভাবনা রয়েছে। ’ বলেন স্পিকার।
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটন সম্ভাবনা অপার। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আধার আমাদের এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের গাঙ্গেয় বদ্বীপ। হিউয়েন সাং, ইবনে বতুতা, মির্জা নাথান থেকে আজকের পর্যটকেরা যারাই এ দেশে এসেছেন, সকলেই মুগ্ধ হয়েছেন। সকলেই এ দেশের ঋতু প্রকৃতির, প্রাণের ও সংস্কৃতির প্রেমে পড়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোন দেশের পর্যটন বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাতটি উপাদান যথা: সাগর, নদী, পাহাড়, বন, ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, ঋতুবৈচিত্র ও আতিথেয়তা এর সব ক’টিই বাংলাদেশের রয়েছে। এখন শুধু প্রয়োজন আমাদের অফুরন্ত এই সম্পদ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো। প্রয়োজন আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পর্যটন গন্তব্যগুলো সঠিকভাবে, সুন্দরভাবে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী পর্যটকদের কাছে তুলে ধরা।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটনের অবদান বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণীয় এলাকায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। শুধু কক্সবাজারেই সাবরাং, নাফ ও সোনাদিয়া এই তিনটি পর্যটন পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পার্ক তিনটির কাজ সমাপ্তির পর প্রতিবছরে এতে বাড়তি ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’
‘কক্সবাজারস্থ খুরুশকুলে শেখ হাসিনা টাওয়ার ও এথনিক ভিলেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও পর্যটকদের সহজ ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিতে দেশের সকল বিমানবন্দের উন্নয়নসহ কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে রেললাইন। দেশের পর্যটন শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এই মুহূর্তে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে। পর্যটন মহাপরিকল্পনার ফলে পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে এই শিল্পের গুণগত উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।
(ঢাকাটাইমস/০৪মে/কেআর/কেএম)