সৌদিতে নগরকান্দার তরুণ আশিকের রহস্যজনক মৃত্যু, লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা

দরিদ্র পরিবারে হাসি ফুটাতে ধার-দেনা করে গত ৮ মাস আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান আশিক মুন্সী (২১) নামে এক তরুণ। সেখান গিয়ে ভালোই চলছিল তার আয়-রোজগার। পরিবারেও ফুটতে শুরু করেছিল হাসির ঝিলিক। কিন্তু আশিক যখন ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে মরিয়া ঠিক তখন ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তিনি কর্মস্থলেই রহস্যজনক মৃত্যুবরণ করেন।

হতভাগা আশিক ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের বনগ্রাম গ্রামের দরিদ্র কৃষক মিজানুর রহমান মুন্সীর ছেলে। আশিকরা দুই ভাই এক বোন। আশিক সবার বড়। গত ১২ মে আশিকের বাবা-মা জানতে পারেন, তাদের ছেলে আর নেই।

এদিকে আশিকের মৃত্যুর খবরে তার বাবা-মা ও দাদা-দাদিসহ স্বজনরা শোকে নিস্তব্দ হয়ে গেছেন। পুরো গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বুধবার বিকালে আশিকের মা হাসি বেগম বলেন, আমাদের বাড়ি ছাড়া কোনো জমিজমা নাই। আমার স্বামী কৃষিকাজ করে সংসার চালান। এমন অবস্থায় আমাদের দরিদ্র পরিবারে একটু আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে ও হাসি ফুটাতে ধার-দেনা করে আশিককে সৌদি পাঠাই। গত ৮ মাস আগে পার্শ্ববর্তী কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের খুদুরিয়া গ্রামের জাফর ফকিরের ছেলে হেলাল ফকিরের মাধ্যমে আশিক বিদেশে যায়। সৌদি আরবের দাম্মামে রাজমিস্ত্রীর হেলপার হিসেবে পাইপ-লাইনের কাজ করতো আশিক।

গত ১১ মে দিবাগত রাত ১২টার দিকে আমাদের সঙ্গে আশিকের মোবাইল ফোনে শেষবারের মতো কথা হয়। পরের দিন ১২ মে বিকালে সৌদি আরব থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে আমাদের খবর দেন আশিক মারা গেছেন। তবে কিভাবে মারা গেছেন তা জানাতে পারেনি ওই ব্যক্তি। আমার ছেলের লাশের ছবিও পাঠিয়েছেন তিনি। কিন্তু এখনো আমার ছেলের লাশ দেশে আনার বিষয়ে কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।

আশিকের বাবা মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, আমার ছেলের লাশ বাংলাদেশে এনে বাড়ির পাশে দাফন করতে চাই। কিন্তু কিভাবে দেশে আনবো, আমাদের জানা নেই। আমার ছেলের লাশ দেশে আনার জন্য আমি সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আমার সুস্থ সবল ছেলেটা এভাবে মারা যেতে পারে না। কে বা কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তা তদন্ত করে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে, এ হত্যার বিচার দাবি করছি।

আরও পড়ুন: সালথায় ৭ মাস ধরে নির্মাণাধীন বীর নিবাসের কাজ বন্ধ, নগরকান্দায় ধীরগতি

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈনুল হক বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যথাযথভাবে আবেদন করলে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/এসএম)