বান্দরবানে নিহত সেনা সদস্য মাছুমের দাফন নোয়াখালীতে

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ মে ২০২৩, ১৫:০৮

বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) হামলায় নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য আলতাফ হোসেন মাছুমের (২৪) দাফন তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে সম্পন্ন হয়েছে।

মাসুমের অকাল মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে মা-বোন সহ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় নিজ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সদর উপজেলার কাদির হানিফ ইউনিয়নের পূর্ব লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামে বাড়ির কবরস্থানে তার দাপন সম্পন্ন হয়।

এরআগে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে চট্টগ্রাম সিএমএইচ থেকে গ্রামের বাড়িতে আসে নিহতের মৃতদেহ।

নিহত সেনা সদস্য আলতাফ হোসেন মাছুম ওই এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। এক ভাই এক বোনের মধ্যে মাছুম বড় ছিলো। মা বোন আর মা মিলে তিনজনের সংসার ছিলো তার। এসএসসি পাসের পর ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন মাছুম।

জানা যায়, আলতাফ হোসেন মাছুমের বাবা আবুল কাশেম স্থানীয় রেইলগেইট এলাকায় ডেকোরেশনের ব্যবসা করতেন। ২০১৭ সালে অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি। পরের বছর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন মাছুম।

বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের জীবিকা উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন মাছুম। এক ভাই আর এক বোনের মধ্যে মাছুম বড়। তার ছোটবোন সানজিদা সুলতানা মিম গতবছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ভাই-বোন আর মা’কে নিয়ে ছিলো মাছুমের সংসার। সবশেষ গত রমজানের ঈদে ছুটিতে বাড়ি আসেন মাছুম।

ছুটি চলাকালীন তার জেঠাতো ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ২৬ এপ্রিল বাড়ি থেকে নিজ কর্মস্থলে চলে যান তিনি। গত ৩ দিন আগে শেষ বার মোবাইলে কথা হয় তার মায়ের সাথে।

মাছুমের মামা জহির উদ্দিন শাহিন বলেন, সবসময় হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েসের মাধ্যমে মাছুমের সঙ্গে আমার কথা হতো। ভয়েস দেওয়ার পর সময়মতো রিপ্লেও আসতো। কিন্তু গত মঙ্গলবার তাকে ভয়েস দেওয়ার পর থেকে আর কোন উত্তর পাইনি। পরে আমি আমার এক খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে তার মৃত্যুর বিষয়টি আমি জানতে পারি। আমার ভগ্নিপতির মৃত্যুর পর আমার ভাগিনা সংসারের হাল ধরেছিলো। দেশের জন্য আজ সেও জীবন দিয়ে দিলে, এখন আমার বোন আর আমার ভাগ্নি একা হয়ে গেল।

এলাকার লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম সিএমএস থেকে তার মামা জসিম উদ্দিন ও স্বজন শিপনসহ সেনাসদস্যরা মাছুমের মৃতদেহ নোয়াখালীতে নিয়ে আসেন। দুপুর ২টায় জানাজা শেষে বাড়ির কবরস্থানে মৃতদেহ দাফন করা হয়।

উল্লেখ্য, আইএসপিআর সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রুমা উপজেলার সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের আওতাধীন জারুলছড়ি পাড়া নামক স্থানে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা গাঁড়ার খবর আসে। এই সংবাদ পেয়ে সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল মঙ্গলবার (১৬ মে) সেখানে যায়।

আরও পড়ুন: তাড়াশে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে প্রাণ গেল এসএসসি পরীক্ষার্থীর

টহল দলটি জারুলছড়ি পাড়ার নিকটস্থ পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলির মুখে পড়ে। এতে দুই অফিসার ও দুই সৈনিক আহত হন। আহতদের দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিএমএইচ নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যান। আহত কর্মকর্তারা বর্তমানে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :