চাঁদপুরে শিশু আদিল খুনের রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২৩, ০৯:৪৮| আপডেট : ২৫ মে ২০২৩, ১১:৩৮
অ- অ+
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার রুদ্রগাঁও তালুকদার বাড়ির আনোয়ার হোসেনের শিশু ছেলে আদিল মোহাম্মদ সোহান (৮) খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এক কিশোর (১৭) গৃহশিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আহাদ ভারতীয় টিভি সিরিয়াল সিআইডি দেখে শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখে বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
বুধবার দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, রুদ্রগাঁও তালুকদার বাড়ির আনোয়ার হোসেন তার শিশু সন্তান আদিল মোহাম্মদ সোহান গত ১৫ মে সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর মসজিদ থেকে বাড়িতে না এলে বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে পরদিন ১৬ মে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। এই ঘটনায় পুলিশের তদন্তকাজ চলছিল। ১৯ মে সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে সংবাদ পেয়ে নিখোঁজ শিশুর বাড়ির পাশের জনৈক আবদুল মতিনের গরুর জন্য চাষকৃত জমি থেকে আদিলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় ওই দিনই শিশুর পিতা আনোয়ার হোসেন ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশের একটি দল মামলাটির তদন্ত শুরু করে। পুলিশ ধারণা করে যে সময়ের মধ্যে শিশু আদিল নিখোঁজ হয়, তা খুবই কম সময়। খুব কাছের লোকের মাধ্যমে এই ঘটনাটি সংঘটিত হতে পারে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পুলিশ তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর গৃহশিক্ষককে মঙ্গলবার (২৩ মে) গ্রেপ্তার করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে কিশোর অপরাধী জানায়, সে নিয়মিত ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখে। সেই আলোকে ঘটনার দিন মাগরিবের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে মসজিদ এলাকা থেকে আদিলকে বাড়ির পাশের নির্জন নার্সারিতে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে আদিলের মুখ ও গলা চেপে ধরলে সে নিস্তেজ হয়ে যায়। ওই সময় তার মায়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আদিলের মার কাছে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য কল দেয়। কিন্তু আদিলের মা তার সন্তানকে খুঁজতে গিয়ে মোবাইল ফোন ঘরে রেখে যান। যে কারণে ফোন রিসিভ হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে কিশোর অপরাধী আদিলের পরিবারের সঙ্গে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। রাত ১২টার দিকে সবাই ঘরে চলে গেলে ঘটনাস্থলে আদিলকে দেখতে যায়, গিয়ে দেখে আদিল জীবিত নেই। এরপর সে রাত ১টার দিকে প্রতিবেশী রেনু বেগমের রান্না ঘর থেকে দা ও কোদাল এনে মাটি খুড়ে জনৈক আবদুল মতিনের গরুর জন্য চাষকৃত জমিতে আদিলের মরদেহ পুঁতে রাখে।
এরপর দা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ওই রান্না ঘরে রেখে দেয় এবং তার মায়ের ব্যবহৃত সীমকার্ড বাচ্চু মিয়ার পুকুরে ফেলে দেয়।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, কিশোর অপরাধীর বয়স ১৭ বছর ৬ মাস। সে একই এলাকার। এ বছর সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার পরিবারে আর্থিক সংকট আছে। আদিলের গৃহশিক্ষক হওয়ার কারণে সে ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিল। সে জানতো আদিলের ঘরে কিছু টাকা আছে। যে কারণে সে এই পরিকল্পনা করে। সিরিয়ালে দেখেছে ৪০ সেকেন্ড মুখ চেপে ধরলে মারা যায় না এবং অজ্ঞান হয়ে থাকে। কিন্তু তার সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগেনি বরং শিশুটির মৃত্যু হয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) পলাশ কান্তি নাথ, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল মান্নান, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহসহ প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/২৫মে/এসএম)
google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশাচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
ধেয়ে আসছে বৃষ্টিবলয় ‘ঝংকার’, জানুন কতদিন সক্রিয় থাকবে
আজ আবারও শাহবাগ ব্লকেড
শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা আজ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা