তিন বছর কারাবন্দি, এখন প্রাণনাশের শঙ্কা সাবেক কাউন্সিলর রাজীবের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ মে ২০২৩, ১৭:২০

একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার ভাই জোসেফ-হারিস-আনিসের কারণে বিনা অপরাধে তিন বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব। তার দাবি, সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর প্রভাবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের (জোসেফ-হারিস-আনিস) উদ্দেশ্য ছিল ভাতিজাকে কাউন্সিলর বানাবে; আর সেটা করেছেনও। নিজের প্রাণনাশের শঙ্কার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা চেয়েছেন রাজীব।

রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। রাজীব একসময় ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তারেকুজ্জামান রাজীব বলেন, ‘খুব অল্প বয়সেই আমি সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি দেখে ঈর্ষান্বিত হয় ঢাকার সন্ত্রাসীগোষ্ঠী তোফায়েল আহমেদের জোসেফ-হারিস আহমেদ-আনিস আহমেদ গং’রা। নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ২০১৯ সালের অক্টোবরে আমাকে গ্রেপ্তারর করানো হয়। এসব কিছু করা হয়েছে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার সন্ত্রাসী ভাইদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য।’

রাজিবের ভাষ্য, ‘আমাকে আটকের পর রাতভর আমার বাসা ও অফিসে তল্লাশি চলেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাদের মতো করে সন্ধান করে। তবে অভিযান শেষে অভিযান পরিচালনাকারী দল গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল- আমার কোনো ক্যাসিনো সম্পৃক্ততা নেই। অথচ সেই অভিযান ছিল 'ক্যাসিনো বিরোধী'।’

নিজের বিরুদ্ধে আনা অঢেল সম্পদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে সাবেক এই কাউন্সিলর বলেন, ‘বিদেশে আমার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য বা প্রমাণ পায়নি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।’

নব্বই দশক থেকে জোসেফ হারিস পরিবার ঢাকা শহরের সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত জানিয়ে রাজীব বলেন, ‘তারা রাজনৈতিকভাবে আত্মপ্রকাশ করতে চায়। মোহাম্মদপুর তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পুরোনো অভয়ারণ্য। সেই এলাকার একজন কাউন্সিলর ছিলাম আমি। আমার জায়গায় তাদের ভাতিজা আসিফ আহমেদকে কাউন্সিলর বানাতে পরিকল্পিতভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছিল। ২০১৯ সালে আমাকে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত একটা মামলা কিংবা জিডি পর্যন্ত ছিল না। কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হয়েও শুধুমাত্র ওই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর প্রভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’

বিনা অপরাধে তিন বছরের বেশি সময় জেলে থাকতে হয়েছে উল্লেখ করে তারেকুজ্জামান রাজীব বলেন, ‘আমার জীবন থেকে তিনটি বছর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমি এবং আমার পরিবার ওই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর হুমকির মুখে আছি। আমার প্রাণনাশের শঙ্কা রয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অমানবিক ঘটনায় জড়িত বিশেষ মহলের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

গ্রেপ্তারের সময় যেসব অভিযোগ উঠেছিল সেসবের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমি আপনাদের সামনে কথা বলতে এসেছি। কারও সৎ সাহস না থাকলে কোনো ব্যক্তি আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারে না।’

সেই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীব বলেন, ‘আপনারা বিজ্ঞ মানুষ, আপনারা কথাগুলো বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। আমরা দুজন কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় তারা আমাদের জীবনের গতি পাল্টে দিয়েছে। তাই ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও তার নাম প্রকাশ করতে পারছি না। আমার এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা শঙ্কা রয়েছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

মোহাম্মদপুর এলাকায় আরও কাউন্সিলর রয়েছে, তাহলে শুধুমাত্র আপনাদের দুজনকেই কেন টার্গেট করা হলো জানতে চাইলে রাজীব বলেন, ‘আপনারা জানেন তাদের ভাতিজা আসিফ (বর্তমান কাউন্সিলর), যিনি ইতোপূর্বে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আমার নির্বাচিত এলাকায় তাকে কাউন্সিলর বানাতেই আমাকে টার্গেট করা হয়। ৯০ দশক থেকেই তাদের ওই এলাকায় বেশি জমিজমা, যেখানে তাদের পুরানো আবাস রয়েছে। আমাকে নির্মূল করতেই মিথ্যা অভিযোগে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়।’

(ঢাকাটাইমস/২৮মে/এসএস/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :