তিমিরকে গিলে খায় আলোর তিমি

মুক্তি যখন আলো হয়ে আসে
গোরের নিকষ কালো তখন বিবশ হয়;
ওই নিশুতির রাজ্যে জ্বলে আগুন
পেঁচাও তখন রূপান্তরের প্রতীক হয়।
দিশেহারা বাঁধন পড়ে খসে
তখন সে আর রয় না নিজের বশে,
কারণ সে তার সর্বনাশের আঁচে
প্রাণ বাঁচানোর ব্যর্থ রথে সওয়ার হয়।
কুঁড়ির বাঁধন ছিন্ন করে পাপড়ি
যেমন মে’লে ডানার পরে ডানা;
মুক্তি তেমন বিরূপ বাঁধন ছিঁড়ে
বিকাশ লাভে, সৌরভে সে ধন্য হয়।
মুক্তি যখন জোয়ার হয়ে ভাঙে
শিলায় বাঁধা তটের গারদ বেড়ি;
‘নদিশাসন’ প্রকল্প যায় ভেসে
বাঁধের শিলা জোয়ার-রাজার দাস্য হয়।
শুক্তি যতোই শক্ত খোলস-গুহায়
মুক্তো রাখে মজ্জাডোরে বেঁধে;
মুক্তিনেশায় মত্ত হলে মুক্তো
খোলস তখন সে ইচ্ছেরই বশ্য হয়।
মায়ের আঁচল হোক মমতার বাঁধন
তবুও শিশু হাত-পা ছুঁড়ে কাঁদে;
মা বোঝে সে চাইছে বাঁধন-মুক্তি
মায়ের কোলকে তাই সে-আঘাত সইতে হয়।
ময়না পোষো খাঁচায় বন্দী করে
সোহাগ যেন উছলে পড়ে কতো;
এতোই যদি দরদ থাকে সত্যি
মুক্ত করে দিলেই তো তা প্রমাণ হয়।
আত্মা যখন মুক্তিরসে রাঙে
সে রস তখন উথালপাতাল ঢেউ,
মুক্তিতিমি তিমিরকে খায় গিলে
তারার আলো ওর পরাণের সখ্য হয়।
যেই বাঁধনের সঙ্গি কেবল আঁধার
সে বন্ধনের বিনাশ হতে বাধ্য;
মুক্তিই যদি সকল স্রোতের মঞ্জিল
ঐক্যস্রোতেই কেবল সে সাধ সিদ্ধ হয়।

মন্তব্য করুন