যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন, ইউপি সদস্যসহ আটক ৫

রাতের আঁধারে যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার সময় সুনামগঞ্জে তাহিরপুরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাহিদ হোসেন রানুসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার ভোর রাতে যাদুকাটা নদীর পাকা রাস্তার মাথা নামক স্থান থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
এসময় বালুভর্তি চারটি স্টিলবডি নৌকা জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ টাকা।
আটককৃতরা হলেন- মোশাহিদ হোসেন রানু বাদাঘাট (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওর্য়াড সদস্য ও ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের মৃত এখলাছ মিয়ার ছেলে, মো. আমিন উদ্দিন (২৩), মো. সায়েম আলী (২২), মো. দেলোয়ার হোসেন ও জয়ন্ত দাশ (২৩)।
জানা গেছে, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ইউপি সদস্য মোশাহিদ হোসেন ওরফে রানুর নেতৃত্বে স্থানীয় একদল বালুখেকো সন্ত্রাসী বাহিনী দীর্ঘদিন যাবত যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে আসছে। যার ফলে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি, সরকারি রাস্তা, নদীর তীরবর্তী আবাদি জমি ভাঙনের মুখে পড়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পরিবেশ ও প্রকৃতি। ইউপি সদস্য রানুর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর চলে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানায়, ইউপি সদস্য রানুর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে ও অবৈধভাবে পাড় কেটে বালু উত্তোলনে বাঁধা দিলে স্থানীয় এক নারী শ্রমিককে মারধর করে ও চুরা দিয়ে শরীরে ও গাড়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী তাহিরপুর থানায় একটি মামলা করে। তাতেও থেমে নেই ইউপি সদস্য রানুর তীর কেটে বালু উত্তোলন ও বিক্রি। শুধু তাই নয়। তার বিরুদ্ধে এর আগেও নদীর পাড় কাটাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই নাজমুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘাগটিয়া গ্রাম সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর পাকা রাস্তার মুখ থেকে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে এএসআই নাজিম উদ্দীনসহ সঙ্গীর পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে বালুভর্তি ৪ স্টিবডি নৌকাসহ তাদেরকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে জব্দকৃত একেকটি নৌকার ধারণ ক্ষমতা সাতশ থেকে এক হাজার ফুট। বালুভর্তি এসব নৌকার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ টাকা। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে নদীর পাড় ভাঙন, নদীর তীরবর্তী মানুষের বসতভিটা ও নদীর ভূ-প্রকৃতি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, এ ঘটনায় বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে আটককৃত ৫ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও সাত/আট জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের পর রবিবার সকালে তাদের সুনামগঞ্জ কোর্ট হাজতে পাঠানো হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এসএ)

মন্তব্য করুন