২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

নিহত যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সীর বাবা-মার অসহায় জীবনযাপন

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৬| আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩, ১১:৩৯
অ- অ+

যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সী। মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামের আইয়ুব আলী মুন্সীর ছেলে। দলের জন্য ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। যেখানেই আওয়ামী লীগের মিটিং-মিছিল হতো সেখানেই ছিল লিটন মুন্সীর অবস্থান। তিনি ছিলেন দলের নিবেদিত কর্মী। আর তার টানেই লিটন সেদিন সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা গিয়েছিলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার সমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন এই যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সী।

সেই নিহত লিটন মুন্সীর পরিবারে শোকের ছায়া এখনও কাটেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় ওই পরিবারে কান্নার পাশাপাশি এখন কিছুটা হলেও আনন্দ বইছে। কিন্তু গত ৪ বছর যাবৎ কেউই খবর নেয়নি তার বাবা-মায়ের। এখন অসহায় জীবনযাপন করছে তারা। পুরোনো ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। তাই গ্রামের বাড়িতে সরকারিভাবে একটি ঘর নির্মাণের দাবি তাদের।

বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবার কেমন আছেন, জানার জন্য রবিবার রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা নিহত লিটন মুন্সীর বাড়ি গেলে এক হৃদয় বিদারক ঘটনার সৃষ্টি হয়। ১৯ বছর পার হলেও লিটনের বাবা-মায়ের ভাগ্যের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।

লিটনের স্ত্রী মাফিয়া বেগম লিটন মারা যাওয়ার ৩ বছর পর আবার প্রবাসী এক যুবককে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন।

সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে একমাত্র মেয়ে মিথিলা মোটামুটি ভালোই আছে।

এ সময় লিটন মুন্সীর মা আছিয়া বেগম, বাবা আইয়ুব আলী মুন্সী কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মা আছিয়া বেগম বলেন, আমার বাবা (লিটন মুন্সী) বলেছিল পুরোনো ঘর মেরামত করার দরকার নেই। আমি এখানে বিল্ডিং দিব। কিন্তু সেটা আর হয় নাই। পুরোনো ঘরেই আমরা থাকি। ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ঘর নির্মাণ করে দেন তাহলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভালোভাবে থাকতে পারব। আমরা দুজনেই অসুস্থ। প্রতিমাসে আমাদের ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এসব টাকা পাব কোথায়?

তিনি আরও জানান, শুনেছি প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে লিটনের মেয়ে মিথিলার নামে ঢাকায় একটি ফ্লাট বাড়ি এবং পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও প্রতিমাসে তার খরচ বাবদ ৫ হাজার করে টাকা দেন। মিথিলা মাদারীপুর থাকে। মাঝে মাঝে আমাদের কাছে ফোন করে।

লিটনের বাবা আইয়ুব আলী মুন্সী জানান, ‘আমার ছেলের তো কোনো দোষ ছিল না। আমার একমাত্র ছেলেকে কবরে শুইয়ে রেখে কিভাবে বেঁচে আছি বলতে পারেন? সরকারিভাবে পাঁচ লাখ টাকা পেয়েছিলাম। চিকিৎসা করতে সে টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন আমি মাসে ৩ হাজার টাকা করে সরকারি ভাতা পাই। এতে আমাদের সংসার চলে না।

এ সময় তিনি এই গ্রেনেড হামলাকারীদের শাস্তির রায় কার্যকর করার দাবি জানান।

নিহত লিটন মুন্সীর একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান মিথিলা বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যখন আমার বাবা মারা যান তখন আমি খুবই ছোট ছিলাম। বাবা কি জিনিস তা বুঝতে পারিনি। বাবার আদর পাওয়ার আগেই বাবাকে হারিয়েছি। হামলার ঘটনায় অপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হলেই আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে।

মিথিলার মা মাফিয়া বেগম জানান, মিথিলা এখন মাদারীপুর সরকারি কলেজ থেকে মানবিক শাখা থেকে এবার এইচএসসি দিচ্ছে। যোগ্য হলে তার একটি চাকরির ব্যবস্থাসহ গ্রেনেড হামলাকারীদের শাস্তির রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।

গ্রেনেড হামলায় অন্যদের মধ্যে নিহত সুফিয়া বেগমের বাড়ি রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মহিষমারি গ্রামে। ওই দিন মহিলা নেত্রীদের সাথে প্রথম সারিতেই ছিলেন সুফিয়া বেগম। চঞ্চলা ও উদ্যমী এই সুফিয়া সপরিবারসহ ঢাকায় থাকতেন। নিহত হওয়ার পর তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ.লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো: জামায়াত আমির
জামালপুরে মাদ্রাসায় ছাত্রী ভর্তিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে ডিএনসিসির কর বকেয়া ৩০ কোটি টাকা
শহীদ নিজামীর খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ: রফিকুল ইসলাম 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা