মানিকগঞ্জে মোবাইল কোর্টে জব্দকৃত বাল্কহেড নিয়ে ধোঁয়াশা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জব্দকৃত একটি ড্রেজার বালু উত্তোলনকারীরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে জব্দকৃত বালুবাহী বাল্কহেডটি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
বালু উত্তোলনকারীরা দলবলসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী হরিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও তাপসী রাবেয়াকে জিম্মি করেছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে জব্দকৃত ড্রেজার ছিনিয়ে নেওয়া এবং এসিল্যান্ডকে জিম্মি করার বিষয়ে এখনো কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও তাপসী রাবেয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে যান তারা। এ সময় তার সঙ্গে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং আনসার সদস্যরা ছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান উপজেলার শেষ সীমানায় ধুলশুড়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এ সময় তিনি ঘটনাস্থল থেকে একটি ড্রেজার এবং বালুবাহী একটি বাল্কহেড জব্দ করেছেন। সেগুলো নিয়ে ফিরে আসার সময় দোহার থেকে স্পিডবোট ও ট্রলারযোগে প্রায় দেড় শতাধিক লোক এসে তাদেরকে ঘেরাও করেন। এ সময় ড্রেজারটি তারা নিয়ে যান।
তবে, বাল্কহেডটি তিনি ছাড়েননি। ঘেরাও করা লোকজন বাল্কহেডসহ তাদেরকে দোহারের মৈনট ঘাট এলাকায় নিয়ে যান। এসিল্যান্ড বিষয়টি মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি ঢাকার জেলা প্রশাসককে জানান। এরপর ঘটনাস্থলে যান দোহারের এসিল্যান্ড এস. এম. মুস্তাফিজুর রহমান। দোহারের এসিল্যান্ডকে মৌখিকভাবে বাল্কহেডটি বুঝিয়ে দিয়ে তিনি হরিরামপুরে ফিরে আসেন। তবে, বাল্কহেড বা ড্রেজারের মালিক কে সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
দোহার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস. এম. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাকে ইউএনও জানান, হরিরামপুরের এসিল্যান্ড এসেছেন মোবাইল কোর্টে, কি একটা বিষয়ে জটিলতা হচ্ছে, তুমি যাও। আমি গিয়ে এসিল্যান্ডকে মৈনট ঘাটে দেখি। তিনি আমাকে জানান, এরা বালু উত্তোলন করছিল আমি বাল্কহেডটি ধরেছি। আপনার কাছে দিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। তিনি আমার জিম্মায় কিভাবে দিলেন, আমি বুঝতে পারছি না। আমাকে লিখিতভাবে দেননি। আমাদের এখানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের কাজ চলছে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলি। তারা জানান, বাল্কহেডটি তাদের সেটি নদী ভাঙন রোধের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসিল্যান্ড যদি বাল্কহেডটি জব্দ করে থাকে, তাহলে সে বিষয়ে তিনিই বলতে পারবেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দোহারের ইউএনও মোবাশ্বের আলম বলেন, এরকম ঝামেলা হয়েছিল শুনেছি। তবে, বাল্কহেডটি বুঝিয়ে দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
মোবাইল কোর্টে জব্দকৃত ড্রেজার ছিনিয়ে নেওয়া এবং এসিল্যান্ডকে জিম্মির বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মেসেজ দিয়ে জানাতে বলে কলটি কেটে দেন। পরবর্তীতে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
(ঢাকাটাইমস/৩০ আগস্ট/ইএইচ)

মন্তব্য করুন