স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মঞ্চে বিশৃঙ্খলা করে আটক, নর্থ সাউথের সেই ছাত্র এখন কোথায়?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অনুষ্ঠানমঞ্চে উঠে শহিদ আল বোখারি (মহাজাতক) সম্পর্কে হঠাৎ বক্তব্য দিয়ে আটক হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে তাকে আটক করে পুলিশ।
পরে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের হেফাজতে দেওয়া হয় মারুফকে। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা বা অন্যান্য অপরাধ বিষয়ে ব্যাপক যাচাই-বাছাই শেষে মারুফকে রমনা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে সিটিটিসি। এরপর মারুফ এখন কোথায়? তার বিষয়ে সিটিটিসি ও থানা পুলিশ কী তথ্য পেল এসব বিষয়ে ঢাকা টাইমস আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছে।
বেসরকারি নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ শেষবর্ষের ছাত্র মারুফ হোসেন। অনুষ্ঠানে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তিনি অপ্রকৃতিস্থ কি না তা জানতে তার মা-বাবা এবং মেয়ে বন্ধুসহ আরও কয়েকজনকে সিটিটিসি কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। কোনো সংগঠনের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা আছে কি না তাও জানার চেষ্টা করা হয়। সব কিছু যাচাই-বাছাই শেষে সিটিটিসি মারুফকে রমনা থানায় হস্তান্তর করে। শনিবার থানা পুলিশ ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলে। পাশাপাশি তাকে অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমাণ্ড আবেদন করা হয়।
সিটিসিটি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঘটনার পর পুলিশ আমাদের কাছে দিয়েছিল। তার সঙ্গে কথা বলেছি। তবে প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। এরপর আমরা থানা পুলিশের কাছে দিয়েছি। পুলিশ তাকে আদালতে তুলে রিমাণ্ড চেয়েছে।’
এদিকে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) শাহ আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা মারুফকে আদালতে তোলার পর রিমাণ্ড চেয়েছি। কারণ, তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। আদালত থেকে কী সিদ্ধান্ত এসেছে সে বিষয়ে এখনো কিছু জানতে পারিনি।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরীফ মাহমুদ অপু জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানস্থল থেকে তাকে পুলিশ আটক করে। এরপর তার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটা জানি না। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে হবে।
অন্যদিকে বিদেশে থাকা একাধিক ব্যক্তি তাদের ফেসবুকে মারুফ হোসেনকে আটকের ছবি পোস্ট দিয়ে তার ক্যাপশনে লিখেছে- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে জুতা নিক্ষেপ করায় মারুফকে আটক করেছে পুলিশ। তবে বিষয়টি খোলাসা করে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়, এক কুচক্রী ফেসবুকে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে, যা অনভিপ্রেত ও বিভ্রান্তিমূলক।
মন্ত্রণালয় যা জানিয়েছে:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় ওই যুবক হঠাৎ মঞ্চে ওঠেন। তিনি মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে শহিদ আল বোখারি (মহাজাতক) সম্পর্কে বিচার দেওয়ার ভঙ্গিতে বলতে থাকেন, ‘মহাজাতক শহিদ আল বোখারি হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিষ্টান মুসলমান সবাইকে বিভ্রান্ত করতেছে।’ যখন আয়োজক ও পুলিশ তাকে সরিয়ে নিচ্ছিল তখন মন্ত্রী তার (যুবকের) কথা শুনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় ওই যুবককে নাম ও পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তিনি নিজের নাম ‘সত্য’ বলে পরিচয় দেন।
এরপর তার বক্তব্য শুনতে চাইলে পুনরায় শহিদ আল বোখারি সম্পর্কে একই কথার পুনরাবৃত্তি করেন। তারপর আয়োজকদের লোকজন ও পুলিশ তাকে সরিয়ে নিলে মন্ত্রী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ সাধারণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে Zulkarnain Saer নামে এক কুচক্রী তার ফেসবুকে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন, যা অনভিপ্রেত ও বিভ্রান্তিমূলক।
(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/এসএস/কেএম)