ধর্ষণ মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগ, ওসির বিচার চেয়ে রাস্তায় স্কুলছাত্রীর মা

বগুড়া ধুনটের সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে ধর্ষণ মামলার মূল চার্জশীটে আসামি করার দাবিতে বগুড়ায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ধর্ষিতার মা।
শনিবার বেলা ১১টায় বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় দেয়ালে এবং হাতে ব্যানার নিয়ে তিনি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওই নারীর হাতে রাখা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘দোষী সাব্যস্ত ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে আসামি করা হবে না কেন? পিবিআই প্রধান, বনজ কুমার মজুমদার জবাব চাই।
মামলার বাদী স্কুলছাত্রীর মা বলেন, মামলার শুরু থেকে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আমাদের সঙ্গে অন্যায় করে আসছিলেন। সঠিক চার্জশিট দেয়ার জন্য তিনি প্রায় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার ঘুষ দাবি করেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি আমার কাছ থেকে ১ লাখ ২২ হাজার টাকা ঘুষ নেন। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকা ওসি কৃপা সিন্ধু নিজেই নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আসামি মুরাদের সঙ্গে আপোষ করে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করেন তিনি। আলামত হিসেবে জব্দ মোবাইল ফোন বেআইনিভাবে নিজের হেফাজতে নিয়ে ওই সময় বগুড়া সদর থানা, ছিলিমপুর ফাঁড়ি, আদমদিঘী থানায় পাঠিয়েছিলেন। সবশেষ তিনি প্রমাণস্বরুপ ভিডিওগুলো নষ্ট করেন।
তিনি আরও বলেন, ভিডিও নষ্টের বিষয়টি পিবিআই পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবিরের তদন্তে প্রমানিতও হয়েছে। সেই প্রতিবেদনও জমা দেয়া হয়েছে। মামলার পরে মেডিকেল রিপোর্টেও ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আসামি জবানবন্দিও দিয়েছে। তাহলেতো মামলার তদন্তের আর কিছু নেই। এরপরেও চার্জশিট মিলছে না।
মামলার বাদী আরও বলেন, মামলার সার্বিক অবস্থা জানার জন্য আমি গত ৮ সেপ্টেম্বর বগুড়ার পিবিআইয়ের এসপি কাজী এহসানুল কবিরের কার্যালয়ে উপস্থিত হই। তিনি আমাকে জানান পিবিআই বগুড়া ও পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার কর্তৃক ফরেনসিক রিপোর্টের ফলাফল একই এসেছে। সুতরাং পিবিআই বগুড়ার পক্ষ থেকে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে কৃপা সিন্ধু বালাকে ফৌজদারী ও বিভাগীয় আইনের যে সমস্ত ধারায় অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছিল তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। কিন্তু পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার মামলার মূল চার্জশিটে কৃপা সিন্ধু বালাকে বাদ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। এসপি কাজী এহসানুল কবির আমাকে কৃপা সিন্ধু বালা ব্যতীত চার্জশিট নেয়ার প্রস্তাব করলে আমি তা প্রত্যাখ্যান করে বাসায় চলে আসি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সবুজ আলী বলেন, মামলার তদন্ত এখনও চলমান আছে। শুনেছি মামলার আসামি মুরাদুজ্জামান জামিন পেয়েছেন। তবে আমার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো নথি নেই।
পিবিআই বগুড়া কার্যালয়ের পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবির বলেন, আমি কিন্তু এমন কোনো তথ্য দেইনি, যে কৃপা সিন্ধু বালা চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত হবেন না। তিনি ধারণার ওপর এসব কথাবার্তা বলছেন। চার্জশিট এখনও দাখিল হয়নি। চার্জশিট দাখিল হলে তবে না বুঝতাম। মামলাটি এখনও তদন্তাধীন আছে। এ বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করা যাবে না।
বগুড়ায় যে তদন্ত করলেন সেখানে নাকি প্রমাণিত হয়েছে এমনটি বাদীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ওরকম না। তিনি আসলে ততটা বুঝেননি। কারণ রিপোর্টতো এখনও দাখিল হয়নি। এ বিষয়েতো এখন মন্তব্য করা যাবে না। রিপোর্ট দাখিল হলে বোঝা যাবে প্রমাণিত না অপ্রমাণিত। রিপোর্ট পেলে আমি জানাবো আপনাদের।
(ঢাকাটাইমস/৩০ সেপ্টেম্বর/ইএইচ)

মন্তব্য করুন