মাদারীপুরে ভাড়া বাসায় মদপানে দুই বান্ধবীর রহস্যজনক মৃত্যু, অসুস্থ ৩ জন আটক

শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় মাদারীপুরে কলেজ রোড এলাকায় দেশি-বিদেশি মদপানে দুই বান্ধবীর রহস্যজনক মৃত্যু।

মাদারীপুরে কলেজ রোড এলাকায় দেশি-বিদেশি মদপানে দুই বান্ধবীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩ জন। পরে তাদের আটক করে পুলিশ।

রবিবার সকালে সদর হাসপাতালে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মাদারীপুর পৌরসভার কলেজ রোড এলাকায় লুৎফর রহমান মোল্লার বাসার ৪ তলায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া দুজন সম্পর্কে বান্ধবী। নিহতরা হলেন- মাদারীপুর পৌর শহরের উকিলপাড়া এলাকার কেএইচ শাকিল আহম্মেদের মেয়ে সাগরিকা আক্তার (২০) এবং তার বান্ধবী ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম এলাকার মালেক মুন্সির মেয়ে পারুল আক্তার (২৬)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, এ বছরের পহেলা অক্টোবর কলেজ রোড এলাকায় লুৎফর রহমান মোল্লার বাড়িতে মা পান্না বেগম, মেয়ে সাগরিকা আক্তার ও মামা বাবু মিয়া- তিনজন ওই বাসায় ভাড়া ওঠেন। শনিবার রাতে বাসায় আসে অপরিচিত আরও ৩ থেকে ৪ জন নারী। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে রুমে ছুটে যান বাসার কেয়ারটেকার হেলাল সরদার। এ সময় ফ্লোরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন সাগরিকা আক্তারকে।

এছাড়া অসুস্থ অবস্থায় সাগরিকার বান্ধবী পারুল (২৬), মা পান্না আক্তার (৪০), মামা বাবু মন্ডল (৩৬), অপরিচিত ডালিয়া বেগম (৪২), সাবিনা ইয়াসমিনকে (৪০) উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পারুলকে মৃত ঘোষণা করেন। মারা যাওয়া দুইজন সম্পর্কে বান্ধবী।

সাগরিকার মামা বাবু মিয়া বলেন, ‘আমার ভাগনি কোথা থেকে মদ নিয়ে এসে আমাকে খাওয়ার জন্য জোরাজুরি করে। পরে বাধ্য হয়ে ভাগনির মন রক্ষায় আমিও মদপান করি। পরে আমার আর কিছু মনে নেই। চোখ মেলে দেখি আমি হাসপাতালে। পরে জানতে পারি ওই মদ খেয়ে আমার ভাগনি আর ওর বান্ধবী মারা গেছে। আমি এর বেশি জানি না।’

স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন মৃধা বলেন, ‘সকালে চিল্লাপাল্লায় লুৎফর মোল্লার বাড়িতে এসে শুনি মদ খেয়ে দুই মেয়ে মারা গেছে। বাকিরা হাসপাতালে ভর্তি। কিছুদিন আগে এই বাসায় ভাড়া উঠেছে পান্না বেগম নামে এক নারী। তারা তিনজন বাড়িতে থাকতো। মাঝে মাঝে কিছু লোকজনও আসা-যাওয়া করতো এই বাসায়। সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করি।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘নিহতরা নেশা জাতীয় দেশি-বিদেশি মদ খেয়ে সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বিষক্রিয়ায় ঘটনাস্থলে সাগরিকা মারা যায়, অন্য সকলকে হাসপাতালে নেয়ার পর পারুলও মারা যায়।’

ওসি আরও বলেন, ‘পহেলা অক্টোবর মা, মেয়ে ও মামা তিনজন ওই বাসায় ভাড়া ওঠেন। শনিবার রাতে বাসায় আসে অপরিচিত আরও ৩ থেকে ৪ জন নারী। পরে ঘটে এই ঘটনা। এরপর অপরিচিতদের আর কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনন করেছে। আপাতত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৫অক্টোবর/প্রতিনিধি/এআর)