ডিকশনারির পৃষ্ঠা কেটে বানানো হয় খাঁজ, তার ভেতরে লুকানো পিস্তল

বাংলা-ইংরেজি ডিকশনারির পৃষ্ঠা কেটে খাঁজ বানিয়ে তার ভেতরে করে অস্ত্রের চালান নিয়ে রাজধানীতে আসছিল একটি চক্র। দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে এসব আগ্নেয়াস্ত্র আসছিল। গেল রবিবার রাতে এই চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- বাবু শেখ, দেলোয়ার হোসেন, মো. মামুন ও মো. রুহুল আমিন। তাদের সবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলায়।

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ জানিয়েছে, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠেছে অস্ত্রের বাজার। সক্রিয় হতে শুরু করেছে অস্ত্র কেনাবেচা চক্র। তারা দেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিনব কৌশলে অস্ত্র সরবরাহ করছে। মুন্সীগঞ্জ থেকে অভিনব কৌশলে অস্ত্রের এ চালান এসেছিল। এ সময় দুটি পিস্তল, ১৩ রাউন্ড শটগানের কার্তুজ ও একটি টয়েটা এলিয়েন মডেলের প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।

মুন্সীগঞ্জকেন্দ্রিক এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র এনে সরবরাহ করত উল্লেখ করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি উত্তরা বিভাগ জানতে পারে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি প্রাইভেটকার দিয়ে অস্ত্র-গুলিসহ মুন্সীগঞ্জ থেকে একটি চালান ঢাকায় আসছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার রাতে শ্যামপুর থানার পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকায় তল্লাশি শুরু করে। এরই মধ্যে টয়োটা এলিয়েন (রেজি. নং-ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-৫১২৩) মডেলের একটি গাড়ি থামার সংকেত দিলে চালক গাড়ি রেখে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় চালকসহ গাড়িতে থাকা চারজজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি বাংলা-ইংরেজি ডিকশনারির ভেতরে পৃষ্ঠা কেটে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

ডিকশনারিতে অস্ত্র রাখার কৌশল সম্পর্কে ডিবি জানিয়েছে, একটি পুরনো ডিকশিনারির ২০৩ থেকে ৫৯০ নম্বর পৃষ্ঠার ভেতরে বিশেষ কায়দায় পিস্তল রাখা হয়। গাড়ির ভেতরে বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা ১৩ রাউন্ড শটগানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

অস্ত্রকারবারিদের বরাত দিয়ে হারুন বলেন, মুন্সীগঞ্জকেন্দ্রিক এই চক্রের প্রধান আহমাদুল্লাহ ওরফে শুভেল। বর্তমানে পলাতক শুভেলের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করত। বিশেষ করে দেশে নির্বাচন এলে তারা সক্রিয় হতো। এরপর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করত। তারা অস্ত্র সংগ্রহের পর ক্রেতাদের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পাঠাত। এরপর কেউ অর্ডার করলে নিজেরাই সরবরাহ করত। এই ঘটনায় রাজধানীর শ্যামপুর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া উত্তরা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইমরান মোল্লা ঢাকা টাইমসকে বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। আদালতে রিমান্ড আবেদন করে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে এলে চক্রের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

(ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর/এসএস/ইএস)