দেশে ওয়াশ খাতে ব্যয় ৫৯ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ২০:২০

২০২০ সালে দেশে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি বা ওয়াশ ব্যয় ছিল ৫৯ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির যা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।

রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশের প্রথম 'ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস' প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, খানাপ্রতি বার্ষিক গড় ওয়াশ ব্যয় সাড়ে ১১ হাজার টাকা। খানার বার্ষিক আয়ের যা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে পানির জন্য ১ হাজার ৫০২ টাকা, পয়ঃনিষ্কাশনে ১ হাজার ৯৮৫ টাকা এবং স্বাস্থ্যবিধিতে ব্যয় হয় ৮ হাজার ৮৭ টাকা।

আয়ের পরিমাণ অনুসারে খানার ওয়াশ ব্যয় হিসাব বলছে, শহর ও গ্রাম উভয়ক্ষেত্রেই দরিদ্র ও অতিদরিদ্র খানাগুলোতে ওয়াশ ব্যয়ের হার সবচেয়ে বেশি।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের অবসান, সবার জন্য সুস্বাস্থ্য, জেন্ডার সমতা, জলবায়ু, পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, শোভন কর্মসংস্থান এবং গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি এসডিজি ছয় অর্জনে সবার জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের প্রাপ্যতা ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) খাতে অগ্রগতি অর্জনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের অংশ হিসেবে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে তথ্য-প্রমাণভিত্তিক পরিকল্পনা ও নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি ওয়াশ খাতে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো নিয়মিতভাবে ‘ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস’ হালনাগাদ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনু্ষ্ঠানে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, এনডিসি, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী, সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক ড. খায়রুল ইসলাম, ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান।

বক্তব্যে ড. শাহনাজ আরেফিন এনডিসি বলেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে নীতি-নির্ধারক, পরিকল্পনাবিদ, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও অন্যান্য অংশীজনদের তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নিয়মিত বিভিন্ন জরিপ পরিচালনা করে থাকে। যথাযথ পরিকল্পনা, নীতি-নির্ধারণ এবং প্রমাণভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য এ খাতের সার্বিক ব্যয়ের সমন্বিত চিত্র তুলে ধরার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিবিএস, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এর কারিগরি সহযোগিতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ কর্তৃক প্রণীত ‘ট্র্যাকফিন’ গাইডলাইন অনুসরণ করে সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস’ প্রণয়ন করেছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, এসডিজি ৬ অভীষ্ট অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সকলের জন্য পানি ও স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ খাতে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যক্তিগত, সরকারি ও অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয়ের কোনো গতিপ্রকৃতি জানা না থাকায় সম্পদের সঠিক বণ্টন ও ব্যয় নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় ছিল।

ওয়াটারএইড-এর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক ড. খায়রুল ইসলাম বলেন, ওয়াশ খাতের যথাযথ পরিকল্পনার বিভিন্ন চালেঞ্জ মোকাবিলায় ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস-এ খানাভিত্তিক ব্যক্তিগত ব্যয় নিরূপণের জন্য খানার ওয়াশ ব্যয় জরিপ পরিচালনা করে প্রাথমিক তথ্য নেয়ার পাশাপাশি ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক জরিপও পরিচালনা করা হয়েছে। প্রাথমিক উপাত্তের সাথে সেকেন্ডারি উপাত্ত সমন্বয় করে সমন্বিত ‘ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস’ প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো প্রণীত বেঞ্চমার্ক উদ্যোগটি ওয়াশ ব্যয়ের গতিপ্রকৃতি চিহ্নিতকরণ ও এ খাতে অর্থায়নের অবস্থা ট্র্যাকিং করার মাধ্যমে তথ্যপ্রমাণভিত্তিক দূরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়নে সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস প্রণয়ন ও গ্রহণের মাধ্যমে সর্বজনীন ওয়াশ পরিষেবা নিশ্চিতে সরকার, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাসমূহের একটি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সহজতর হবে। সম্ভব হবে ওয়াশ খাতের বর্তমান উন্নয়ন ধারাকে বেগবান করতে যথাযথ অর্থায়নসহ টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত পানি সম্পদের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে।

‘ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস’ প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল ওয়াশ অ্যাকাউন্টস প্রণয়ন কার্যক্রমের ফোকাল পয়েন্ট ও উপপরিচালক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো মো. আলমগীর হোসেন।

এসময় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিকের পাশাপাশি অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং ওয়াটারএইড বাংলাদেশ-এর কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/এমআই/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :