বিশ্বে প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশের জান্নাতুল

বিশ্বের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের জান্নাতুল ফেরদৌস। এ তালিকায় রয়েছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, তেমনি স্থান পেয়েছেন মেয়েদের ব্যালন ডি’অর জয়ী আইতানো বনমাতি।

মঙ্গলবার এ তালিকা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

জান্নাতুল ফেরদৌস বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের একজন কর্মী। ১৯৯৭ সালে তিনি সবেমাত্র স্নাতক (সম্মান) শেষ করেছেন। একদিন রান্না করতে গিয়ে ওড়নায় আগুন লেগে যায়। এতে পুড়ে যায় তার ৬০ শতাংশ শরীর। কুঁচকে বিকৃত হয়ে যায় মুখ, শরীরের ওপরের অংশ। গলা লেগে যায় ঘাড়ের সঙ্গে। সব মিলিয়ে তার শরীরের পোড়া অংশের চামড়া প্রতিস্থাপনসহ অস্ত্রোপাচার লেগেছে ৫০টি। এরপরও বেঁচে যান জান্নাতুল।

প্রায় ২৬ বছরের পোড়া ক্ষতের জীবন জান্নাতুলের। এ জীবনে তিনি থেমে থাকেননি। তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ, লেখালেখি এবং প্রতিবন্ধীদের অধিকারের বিষয়ে কাজ করেছেন। তিনি ভয়েস অ্যান্ড ভিউজ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটি অগ্নিদগ্ধ নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে। ২০১৫ সাল থেকে তিনি এ সংগঠনের সঙ্গে আছেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস তিনটি উপন্যাস লিখেছেন এবং পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করা জান্নাতুল উন্নয়ন গবেষণা বিষয়েও পড়াশোনা করেছেন। বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের কাছে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে বেশি পরিচিত। তিনি পাঁচটি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছেন। তাছাড়া তিনি সমাজের প্রতিবন্ধীদের সচেতন করতে দারুণ স্টোরিটেলিং করে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন।

পড়াশোনায়ও নিজেকে এগিয়ে রেখেছেন জান্নাতুল। এ সময় পাশে পেয়েছেন পরিবার ও বন্ধুদের। তাদের সহায়তায় অনিয়মিত (প্রাইভেট) শিক্ষার্থী হয়েছেন ইডেন মহিলা কলেজে। সেখান থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স শেষ করেন। এরপর এলএলবি পাস করেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে মাস্টার্স করেন। চলচ্চিত্রবিষয়ক বিভিন্ন শর্ট কোর্স করেন। তবে জান্নাতুলের ভাষায় ভালো চলচ্চিত্র বুঝতে এবং ভালো দর্শক হওয়ার জন্যই ছিল তার এ পড়াশোনা।

(ঢাকাটাইমস/২১নভেম্বর/জেডএম/কেএ)