স্ত্রী হত্যার দায়ে পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সিরাজগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মনিরুল ইসলাম নামের চাকরিচ্যুত এক পুলিশ কনস্টেবলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক এরফান উল্লাহ এই রায় প্রদান করেন।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মশিউর রহমান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামি এর আগে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। পরে তিনি পুলিশ থেকে বরখাস্ত হন। আজ রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার চর কালীগঞ্জ গ্রামের সাহেব আলী প্রামাণিকের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মনিরুল ইসলাম ২০১৮ সালে পুলিশে যোগদানের পর পার্শ্ববর্তী সুরভী খাতুনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মনিরুল ইসলাম তার স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ ও মারধর করতেন। এর মধ্যে মনিরুল অন্য এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মনিরুল ইসলাম প্রায় সময় তার স্ত্রীকে বলতেন, তোকে আমার পছন্দ হয়নি। তুই বিষপানে আত্মহত্যা কর। আমার পথটা পরিষ্কার করে দে।
একপর্যায়ে ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট সুরভী খাতুন তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এদিন রাতে মনিরুল তার স্ত্রীকে মুঠোফোনে কল করে বাড়ির বাইরে যেতে বলেন। পরে মনিরুল তার স্ত্রীকে নিয়ে চলে যান।
পরের দিন ২৮ আগস্ট দুপুরে প্রতিবেশী নালু মন্ডলের ডোবার পানিতে সুরভী খাতুনের মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা তার পরিবারকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহত সুরভীর বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মনিরুল ইসলাম, তার ভাই মোন্নাফ হোসেন, মা মোনেকা বেগমসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ মনিরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালে ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদলত আজ এই রায় দেন।
(ঢাকাটাইমস/২১ নভেম্বর/ইএইচ)

মন্তব্য করুন