ফরিদপুরে ১৫ টাকা কেজির চালে অনিয়মের অভিযোগ ভুক্তভোগীদের

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা
  প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৮
অ- অ+

ফরিদপুর সদর উপজেলায় কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র মানুষের মধ্যে ১৫ টাকা কেজির চাল বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

যদিও অভিযুক্ত ডিলারদের দাবি, নতুন দায়িত্বে আসা ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে এ অভিযোগ তোলা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। আর প্রশাসন বলছে এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু হয়েছে, কেউ দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ভবানিপুর গ্রামের সুশীল কুমার দাসের পুত্র বিষ্ণু পদ দাস প্রায় দুই বছর আগে মারা যান। বিষ্ণু দাসের ভাই সুশান্ত দাস ও তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিষ্ণু দাসের মৃত্যুর পরও চাউল উত্তোলন করা হলেও আজ পর্যন্ত নিহতের পরিবার কোনো চাল পায়নি।

আরও কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে একই পরিবারের খানাভুক্ত একাধিক ব্যক্তির নাম তালিকাভুক্ত করা হলেও চাল দেওয়া হচ্ছে না সবাইকে। এছাড়া নানা কারণ দেখিয়ে এমন অনেকেরই চাল দেওয়া হচ্ছে না বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। এছাড়া একই ব্যক্তির ছবি একাধিক কার্ডে ব্যবহার করে চাল তোলাসহ অনেকের কার্ড তাদের কাছে বুঝিয়ে না দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ৫১২ নং কার্ডের সুবিধাভোগী শ্যামলী শীল, ১৫ নং কার্ডের সুবিধাভোগী কাউসার কাজীসহ কয়েকজন জানান কার্ড থাকলেও নিয়মিত মাল পান না তারা।

এদিকে ন্যায় বিচার পেতে ভুক্তভোগীরা গত ২১ নভেম্বর ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এসে জড়ো হন। পরে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের নিকট তাদের নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।

এদিকে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান এসব অনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করে জানান, বর্তমান ডিলাররা পুর্বে দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় এ সকল অনিয়ম করেছে।

তাদের দাবি, চাল বিতরণের এ অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ডিলাররাই যুক্ত। এ ঘটনায় ডিলার মো. সাইফুল ইসলাম, মো. আবু বকর সিদ্দিকী ও মো. ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট ডিলারদের দাবি, ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে বর্তমান চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা এ অভিযোগ তুলছেন। তালিকা প্রণয়নে তাদের হাত নেই উল্লেখ করে জানান, সুবিধাভোগী মারা গেলেও তা হালনাগাদ না করায় চাল উত্তোলন হয়েছে, আগামীতে এমন হবে না বলে জানান তারা। গ্রাম্য রাজনীতির শিকার হচ্ছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তোলেন তারা। তবে চাল একেবারে না দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানান ডিলাররা।

এদিকে অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্তে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী। তিনি জানান, তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিলার বা অন্য যেই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকুক কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহ্সান তালুকদার হুঁশিয়ার করে বলেন, শুধু কৃষ্ণ নগরই নয় জেলা ৮১টি ইউনিয়নের যেই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল নিয়ে অনিয়ম করবে তার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে করা তালিকানুযায়ী এ কর্মসূচির আওতায় ফরিদপুর জেলার ৮১টি ইউনিয়নে ৮৬ হাজার ৩৫০জন কার্ডধারী সুবিধাভোগী রয়েছেন। এসব অনিয়ম দুর করতে বর্তমান তালিকা হাল নাগাদ করার দাবি সংশ্লিষ্টদের।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
স্বৈরাচার পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে: তারেক রহমান
ইডেন-জয়পুরের পর এবার দিল্লি স্টেডিয়াম উড়িয়ে দেয়ার হুমকি
নাসিরনগরে দুই গোত্রের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০
তুরস্কের তৈরি ৩০০-৪০০ ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, দাবি ভারতের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা