রাজপথে নামুন, দেখবো প্রধানমন্ত্রী কতজনের রক্তের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে পারেন: সেলিমা রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৬ | প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৩৯

বর্তমান সরকারের পদত্যাগে জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, জনগণকে বলবো আপনারা এগিয়ে আসুন। আমরা কিন্তু আপনাদের জন্য লড়াই করছি। আপনারাও রাজপথে এগিয়ে আসুন। দেখা যাক কতজনের রক্তের ওপর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবারো ক্ষমতায় যেতে পারেন।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিএনপির নির্যাতিত স্বজনদের প্রধান বিচারপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশের পূর্বে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন সেলিমা রহমান।

সেলিমা রহমান বলেন, একটা ফ্যাসিস্ট সরকার কীভাবে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার তার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য দেশের জনগণের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। শাহজাহান ওমরকে বিএনএমে বা কিংস পার্টিসহ আরও কি কি দলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে সরকার।

সুশাসন ফিরিয়ে আনতে লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে সেলিমা রহমান বলেন, দেশের মানুষ এক অসহনীয় পরিস্থিতিতে আছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করা।

নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পুলিশ যাকে গ্রেপ্তার করতে যায়, তাকে না পেলে তার স্বজনদের ধরে নিয়ে যায়। এরা মানুষের কষ্টে আনন্দ পায়। ক্ষমতায় যারা বসে আছেন, তারা পাষাণ, তাদের হৃদয় পাথর। আপনারা প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দেবেন, উনার কিছু করার আছে বলে মনে হয় না। হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার আছেন। তাদের স্বজনরা একযোগে রাস্তায় এলেই তো হয়ে যায়। এ নির্বাচন নির্বাচন নয়, এটা জনগণকে নির্বাসনে পাঠানো। চলুন আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে লড়াই করি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে যারা কারাগারে বন্দি, তাদের স্বজনরা বিচার চাইতে এসেছেন। ২৮ তারিখের সমাবেশে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা সৃষ্টি করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সামরিক শাসন দেখেছেন। আমরা আপনার কাছে বলতে চাই, আদালত একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, জনগণের শেষ ভরসা। আপনি বিচারপতিদের নির্দেশ দেন তারা যেন ন্যায়বিচার করেন। দমনপীড়ন করে সরকার একতরফা নির্বাচন করতে চাইছে। আপনার আদালতে যদি ন্যায়বিচার না হয়, তাহলে জনগণের আদালতের বিচারে আপনারা কেউ পার পাবেন না। কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা পুরো বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, সরকারকে বলবো নির্যাতিত পরিবারের কথা শুনুন। আমার অনুরোধ যাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে রেখেছেন অতিসত্বর তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আমার ছোট্ট শিশুটিও পুলিশের আচরণ দেখেছে। এখন পুলিশ দেখলেই ভয় পায়। শেখ হাসিনা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অভিশপ্ত বাংলাদেশ তৈরি করছেন। পুলিশ যে আচরণ করছে, এদের বিচার হবে। বিচারপতিদের বলি, সরকারের অবৈধ আদেশ পালন করে জনগণের রোষানলে পড়বেন না। আরেকটু ধাক্কা দিলেই সরকার পড়ে যাবে। আমাদের আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সাজানো ফরমায়েশি মামলায় গ্রেপ্তাকৃতরদের স্বজনরা মানবিক দাবি নিয়ে এখানে এসেছেন। কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া সম্ভব না। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দেশে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। ফিলিস্তিনের গাজার পরিবর্তে বাংলাদেশে এখন মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে সরকার। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই গ্রেপ্তার করছে। তাতে মনে হয় পুলিশ সরকারের অঙ্গ সংগঠন।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়াকে একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমার বাড়িতে এসে মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করার সময় আধা ঘণ্টা গেট পিটিয়েছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের ছেলেরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে।

এদিকে সমাবেশকারীরা সমাবেশ শেষে তাদের দাবি নিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের বাধা দেয়।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস হাই সিকদার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ইউট্যাব সভাপতি প্রফেসর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বিএনপি নেত্রী আসিফা আশরাফী পাপিয়া প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৮ নভেম্বর/জেবি/কেএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :