ফরিদপুর-১ আসনে সাত প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম জমা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিনে উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে ফরিদপুর-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন সাত প্রার্থী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষকলীগের সাবেক সহ সভাপতি, সমাজ সেবামূলক সংস্থা কাঞ্চনমুন্সী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও দৈনিক ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।

দুপুর ২টায় বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইনের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি।

ফরিদপুর অঞ্চলের মানবহিতৈষী পুরুষ প্রয়াত কাঞ্চন মুন্সীর সুযোগ্য উত্তরসূরি আরিফুর রহমান দোলন। তিনি আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর মানুষের জন্য নিরলসভাবে নানামুখী উন্নয়ন কাজ করে আসছেন। মানুষের কাছে থেকে মানুষের পাশে থেকে দোলন পরোপকারী জননেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। দোলনের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড লাখো মানুষের প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। আর তাই নির্বাচনে সাধারণ মানুষ তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন বলে আশাবাদী তিনি।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আরিফুর রহমান দোল বলেন, ‘আমি কয়েক দশক ধরে ফরিদপুর-১ আসনের আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালির সর্বস্তরের মানুষের, এ এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। আমি মনে করি এ এলাকার মানুষ আমাকে চায়। আমি আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আমি মনে করি, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ অঞ্চলের ভোটারগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করবেন এবং আসনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির হাতে তুলে দেবেন।

সরকার দলীয় প্রার্থীর থেকে কোনো চাপ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন কিনা— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দোলন বলেন-‘সরকার কখনোই কাউকে চাপ দেয় না, দেবেও না। নির্বাচন কমিশনার- নির্বাচন, স্বাধীনভাবে পরিচালনা করবে। তারা বলেছে, সুস্পষ্ট ভাবেই বলেছে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সরকারে সব সংস্থা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে মাঠে কাজ করছে। জনগণ যে রায় দেয় সবাই তা মেনে নেবে, সরকারও মেনে নেবে। এটা প্রধানমন্ত্রীর কথা, সরকারের কথা, আমার কথা।

আরও পড়ুন>ফরিদপুরের দুই আসনে স্বতন্ত্র ভোট করবেন হেভিওয়েট দুই প্রার্থী আজাদ ও দোলন

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবে এটা আমার বিশ্বাস, জনগণের বিশ্বাস। এখানে চাপ প্রয়োগের কোনো বিষয় নেই।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আরিফুর রহমান দোলন বলেন- ‘আমি বিপুল সাড়া পাচ্ছি। ইতোমধ্যে আলফডাঙ্গা, বোয়ালমারী, মধুখালির হাজার হাজার মানুষ আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। তারা চান এই জনপদ যেন শান্তির জনপদ হয়, উচ্ছৃঙ্খলতা যেন কোনোভাবেই পৃষ্ঠপোষকতা না পায়। এ অঞ্চলের মানুষ শান্তিতে একত্রে বসবাস করতে পারেন, জাতীয় উন্নয়ন কাঠামোর মধ্যে এ অঞ্চলের উন্নয়ন হয়, আমরা যেন পিছিয়ে না থাকি সেই জন্য তারা আমাকে নির্বাচিত করবেন।

নির্বাচিত হলে ফরিদপুর-১ আসনের এলাকায় কৃষি ভিত্তিক শিল্পাঞ্চল, তথ্য প্রযুক্তি সমন্বিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় কাজ করবেন বলে জানান দোলন। বলেন, আমি কয়েক দশক ধরে যে মানবিক কাজ করেছি তা তারা দেখেছেন, অন্যদের কাজও দেখেছেন, তাই জনগণ কাজের মূল্যায়ণ করবে। তারা তাদের রায় আমাকে দেবে এটা আমার বিশ্বাস। আমি নির্বাচিত হলে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন এ অঞ্চলে কৃষি ভিত্তিক শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলব- যাতে এ এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়, শিক্ষার অগ্রগতির লক্ষ্যে কম্পিউটার আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি সমন্বিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবো সেই সঙ্গে আমি নির্বাচিত হলে এ অঞ্চলে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় কাজ করব।’

এদিকে শেষ দিনে এই আসনে মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান। তার পক্ষে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেন তার সহধর্মিণী, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. মির্জা নাহিদা রহমান বন্যা।

এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর প্রার্থী, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর এর পক্ষে মনোনয়ন ফরম জমা দেন তার ভাগ্নে মো. জাকির হোসেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী কে এম. নুরুল ইসলাম সিকদার বোয়ালমারীতে মনোনয়ন ফরম জমা দেন।

আসনটির অপর উপজেলা মধুখালিতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আক্তারুজ্জামান ও জাকের পার্টির আব্দুর রউফ মোল্যা। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. গোলাম কবির নির্দিষ্ট সময়ের ২ মিনিট পরে আসায় তার মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন নাই।

ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/ইএস