শেনজেন: এক গ্রামের নামে ২৭ দেশের ভিসা

শাব্বির আহম্মদ
| আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:০২ | প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৫৪

শেনজেন হলো লুক্সেমবার্গের ছোট্ট একটি গ্রাম যা ফ্রান্স, জার্মানি ও লুক্সেমবার্গের সীমান্তে অবস্থিত। এই গ্রামে ১৯৮৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত পাঁচটি দেশ একত্রে বসে নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সীমান্ত তুলে দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে শেনজেন কনভেনশন স্বাক্ষর হয়। এরপর থেকে একে একে ২৭টি দেশ শেনজেনভুক্ত হয়। দেশগুলো নিজেদের মধ্যে বর্ডার বা সীমানা বাধা তুলে নিয়েছে। এতে সুবিধা হলো এক সদস্য দেশ থেকে অপর সদস্য দেশে যেকোনো নাগরিক অবাধে ভ্রমণ করতে পারে। আর সদস্য দেশের বাইরের কোনো নাগরিককে একক কোনো দেশের ভিসা না দিয়ে ‘শেনজেন ভিসা’ দেওয়া হয়। এজন্য শেনজেনভুক্ত যে কোনো দেশের ভিসা পেলে দেখা যায় তাতে ‘শেনজেন ভিসা’ কথাটা লেখা থাকে। এ ভিসা দিয়ে শেনজেনভুক্ত যেকোনো দেশ ভ্রমণ করা যায়।

একটা বিষয় খুব পরিষ্কার হওয়া দরকার যে, অনেকেই মনে করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোই বুঝি শেনজেনভুক্ত দেশ। বস্তুতপক্ষে, শেনজেন আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক বিষয় নয়। এমনকি এদের মধ্যে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্কও নাই। ভুল বুঝাবুঝির অবসানে মনে রাখা দরকার যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সকল সদস্য দেশ যেমন শেনজেনের সদস্য না তেমনি করে শেনজেনভুক্ত সকল দেশও আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয়। যদিও উভয় সংগঠনই ইউরোপের। বর্তমানে ইংল্যান্ড না শেনজেনের সদস্য না ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য- যদিও একসময় ইংল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের ৩১শে জানুয়ারি রাত বারোটায় ইংল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করে সদস্য হিসেবে নিজেদের খারিজ করে বের হয়ে আসে। শেনজেন মুলত ভিসা এবং ভ্রমণসংক্রান্ত বিষয়। অপরদিকে জোটভুক্ত দেশগুলো বস্তুত নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের একটি সাংগঠনিক সংস্থা হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

আবার নরওয়ে, আইসল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, লিসটেনটাইন- এ দেশগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশ নয় কিন্তু শেনজেনের সদস্য। আবার ইউরোপের বড়ো বড়ো দেশগুলোর মধ্যে আকারে ছিটমহলের মতো ক্ষুদ্র কিছু দেশ আছে যেমন: মোনাকো, ভ্যাটিকানসিটি, সানমেরিনো- এরা শেনজেনভুক্ত না হলেও ভৌগোলিক বাধ্যবাধকতার কারণেই তাদের বর্ডার খুলে রাখে শেনজেনভুক্ত দেশগুলোর জন্য। একটা ব্যতিক্রম জেনে রাখা দরকার যে, ইউরোপের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ তুরস্ক কখনোই না শেনজেন, না ইউরোপীয় ইউনিয়ন কারো সদস্য হতে পেরেছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ক্রোয়েশিয়া শেনজেনভুক্ত দেশ হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০২ ডিসেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :