চট্টগ্রাম-৫: সালামের ভয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল, আনিসের ভয় মহাজোট

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:০১

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-বায়েজিদ আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এম এ সালাম। তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। দুই প্রার্থীর একজন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন, অন্যজন শরিক দলের ছাড় না দেওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, উত্তর হাটহাজারীর ফরহাদাবাদ, ধলই, মির্জাপুর ও নাঙ্গলমোড়াসহ ৫টি ইউনিয়ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া ইউনুস গণি গ্রুপের দখলে থাকায় ভয়ে আছেন এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনসটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া এমএ সালাম।

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে এমএ সালামকে সভাপতি ও শেখ আতাউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ কমিটিতে রাখা হয়নি বিগত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইউনুস গণি চৌধুরী ও সদস্য মঞ্জুর আলম চৌধুরীসহ অনেক নেতাকে। এতে প্রকট আকার ধারণ করে দলীয় কোন্দল।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জেলা পরিষদের প্রশাসক ও চেয়ারম্যানের পদটিও ভাগিয়ে নেন এম এ সালাম। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। একজনকেই সকল পদ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন তারা।

এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাট হাজারী উপজেলায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ৬টি গ্রুপে বিভক্ত হলেও প্রকাশ্যে রয়েছে সালাম, ইউনুস গণি ও মঞ্জুরুল আলম গ্রুপ।

অপরদিকে প্রকাশ্য না হলেও ভিতরে ভিতরে জসিম উদ্দিন শাহ, রাশেদুল ইসলাম রাসেল এবং রাশেদুল আলম গ্রুপও সক্রিয় আছে বলে জানা গেছে।

একদিকে দলীয় গ্রুপিং অন্য দিকে মহাজোটের শক্ত প্রার্থীর কারণে শেষ পর্যন্ত হাতছাড়া হতে পারে আসনটি এমন ভয় কাজ করছে এমএ সালামের মাঝে।

তবে ১৯৯৬ সাল থেকে হাটহাজারীর জনপদে চষে বেড়ানো এমএ সালামকেও ভয় পাচ্ছেন মহাজোটের নৌকায় চড়ে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। আওয়ামী লীগ আসনটি বরাবরই জোটের শরিক দল জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়ে আসছে। কিন্তু এবার ছাড় দিতে নারাজ বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

তবে আশা ছাড়ছেন না জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি এবারও ধরে রাখতে চান আসনটি। তিনি তাকিয়ে আছেন জোটের শরিক আওয়ামী লীগের দিকে। আশা করছেন এবারও তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে আসনটি।

চট্টগ্রাম-৫ সংসদীয় আসন ১টি পৌরসভা, ৯টি ইউনিয়ন ও সিটি কর্পোরেশনের দুটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।

১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি প্রয়াত এম আবদুল ওয়াহাব। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এরপর তিনি একটানা ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা প্রয়াত সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম। এরপর ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন মহাজোট প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে হারিয়ে ‍পুনরায় জয়লাভ করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৪ডিসেম্বর/পিএস/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :