সরিষার ফলন নিয়ে শঙ্কায় যশোরের চাষিরা

যশোর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:২৫

যশোর জেলায় সরিষার ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তারা বলছেন, প্রতিকূল আবহাওয়া রয়েছে, কমে গেছে মৌমাছির আনাগোনা। এ কারণে সরিষা চাষে ক্ষতির শঙ্কাও দেখা দিচ্ছে।

চাষিরা জানিয়েছেন, গত বছর সরিষার বেশ ভালো ফলন হলেও এ বছর মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি কমে গেছে। যদিও কিছু গাছে ফুল আছে, কিন্তু আগের মতো মৌমাছি আসছে না। মৌমাছি ছাড়া পরাগায়নে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে উৎপাদনও কমে গেছে।

তবে কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি এবার সরিষার ফলন ভালো হয়েছে এবং আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে।

জেলায় গত তিন রবি মৌসুমে সরিষার চাষ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২০২১-২০২২ রবি মৌসুমে ১৫ হাজার ২৮১ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিলো। ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে চাষ হয়েছিল ২৪ হাজার ৩০২ হেক্টর জমিতে। চলতি রবি মৌসুমে আবাদ হয়েছে ৩১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের চেয়ে এবার ৭ হাজার ২৭৮ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। জেলায় উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও স্থানীয় এই দুই ধরনের জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে টরি-৭, টরি-১০, বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭,বারি সরিষা-১৮ ও বিনা সরিষা-৯ জাতের সরিষা চাষ বেশি পরিমাণের জমিতে হয়েছে।

মনিরামপুরের জামজামি গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, সরিষা আমাদের সাথী ফসল। প্রতিবছরই আমরা চাষ করি। এ বছরও করেছি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ক্ষতির মুখে পড়েছি।

এ বছর তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন একই গ্রামের আরেক কৃষক রুবেল হোসেন। তিনি বলেন, লাভের আশা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছি। মৌমাছি ক্ষেতে আসছে না, ফলে পরাগয়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে এবছর অসময়ে বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

এবার ৩৫ কাঠা জমিতে তিনি সরিষার আবাদ করেছেন বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের চাষি জাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সরিষা গাছের অবস্থা বেশ খারাপ। মনের দুঃখে খেতেও যাচ্ছি না। এবার মৌসুমের শুরুতেই ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে লাগাতার বৃষ্টিতে সরিষা গাছগুলোর বেশ ক্ষতি হয়। লক লক করে ওঠা গাছগুলোর বেশিরভাগই নেতিয়ে পড়েছে। তারপরও কিছু ছিল। দুদিন কুয়াশার পর দেখি, আবারও কাহিল। এবার বিঘা প্রতি প্রায় ৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। বৃষ্টির পর এবার মৌমাছির আনাগোনাও দেখছি না।

তবে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া সরিষা চাষের অনুকূলে আছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার।

তিনি বলেন, রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণও কম। তবে এবার মৌমাছি কম দেখা যাচ্ছে। এটা প্রাকৃতিক বিষয়। পরাগায়ন শুধু মৌমাছি দিয়ে হবে তা নয়, ১০০ প্রজাতির কীটপতঙ্গ ফুলের পরাগায়ন ঘটায়। বাতাসও ফুলের পরাগায়ন ঘটায়। তবে মৌমাছি পরাগায়ন ঘটালে ফলন ৫ থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

মৌমাছি কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরিষার পর পরই মৌমাছি কালোজিরার ফুলের সন্ধানে চলে যায়। ফরিদপুরে কালোজিরা চাষ এবং সেখানে মৌমাছির অভয়রাণ্য রয়েছে। মৌমাছির থাকলে যেমন পরাগায়ন এবং ফলন বাড়ে সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত হিসেবে মধুও পেয়ে থাকেন চাষিরা। সেটাও লাভের বিষয় বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :