ভৈরবে এক বছরে ট্রেনে কাটাপড়ে ৭১ জনের মৃত্যু

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:২৬

ভৈরব রেলওয়ে জংশন থানাধীন এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে গত ১ বছরে নারী পুরুষ ও শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছেন ৭১ জন। যাদের মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ, ১৭ জন নারী ও ৫ জন শিশু রয়েছে ।

নিহতদের অধিকাংশই অজ্ঞাত। এসব মৃত্যুর ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় ৭১টি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে থানা পুলিশ।

রেলওয়ে থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত ২০২৩ সালের ১ জানুয়ার থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভৈরব-টঙ্গী, ভৈরব-সরারচর রেল পথের বিভিন্ন এলাকায় পৃথক পৃথক ঘটনায় নারী, পুরুষ ও শিশু সহ মোট ৭১ জন ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে । নিহতদের মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ এবং ১৭ জন নারী ও ৫ জন শিশু রয়েছে । অসতর্কতার কারণে এসব বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ট্রেনে কাটা পড়ে যাত্রী ও পথচারীরা মর্মান্তিক মৃত্যু বরণ করেন।

ভৈরব রেলওয়ে থানাধীন ভৈরব-টঙ্গী ৭০ কিলোমিটার ও ভৈরব-সরারচর পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রেলপথ। ভৈরব রেলওয়ে থানা সীমানায় রয়েছে মোট ১৯টি রেলওয়ে স্টেশন। এ পর্যন্ত যারা মারা গেছে তারা চলন্ত ট্রেনে ওঠানামা, রেলপথ পারপার, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণরত যাত্রী, দুই বগীর সংযোগ স্থলে বসে যাতায়াত কিংবা ট্রেনের দরজার হাতলে ঝুলন্ত অবস্থায় যাতায়াতকালে অসাবধানতা বশত ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এ সকল মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করলেও এইসব স্টেশন থেকে বিশেষ করে লোকাল ও মেইল ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী ট্রেনের বগির সীমাবদ্ধতার কারণে ঝুকিপূর্ণ ভ্রমণ করায় এসকল মৃত্যু হয়।

ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ইউছুফ আলী মোল্লা জানান, ট্রেন আসার আগ মুহূর্তে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের উদ্দেশে স্টেশনে মাইকিং করে জানানো হয় যাত্রীরা যেন রেলাইন থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখে। রেল লাইন পারাপারের সময় ওভারব্রিজ ব্যবহার করে। চলন্ত অবস্থায় ট্রেন থেকে নামতে গিয়েও অনেকেই ট্রেনে কাটা পড়েন। এছাড়াও বিরতিহীন ট্রেন থেকে ধীরগতি অবস্থায় যাত্রীদের অনেকেই এ স্টেশনে উঠানামা করতে গিয়ে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। চলন্ত অবস্থায় ট্রেনে উঠা নামা মোটেই উচিত নয়। রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষ সব সময়ই যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক প্রচারণা করে থাকে।

ভৈরব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ইন্সপেক্টর এস এম তাজবীর বলেন , রেল ভ্রমণে যাত্রীরা যেন ট্রেনের ছাদে , ইঞ্জিনে, কিংবা দুই বগীর সংযোগস্থলে বসে যাতায়াত না করে সেজন্য আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকি। দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেন আসার আগ মুহূর্তে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সাইরেন বাজিয়ে যাত্রীদের সতর্ক করে থাকে। অসতর্কতাবস্থায় যাত্রীদের রেল লাইন পারাপার কিংবা ট্রেনে উঠানামা করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আলীম সিকদার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ রেল ভ্রমণের কারণে রেলওয়ে পুলিশ আর্থিক জরিমানা করে আদালতে সোপর্দ করলেও পরবর্তীতে তারা বেরিয়ে এসে পুনরায় ওই পথই বেছে নেয়। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে চলন্ত ট্রেনে ওঠানামা ত্যাগ এবং স্টেশনে স্টপেজ নেই এমন ট্রেনে ভ্রমণ না করাসহ ওভারব্রিজ ব্যবহার করা হলে ওই সকল অনাকাঙিক্ষত দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। ট্রেনের বগির ভেতরে বসে যাতায়াত ব্যতীত ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ অনেকটা রোধ করা গেছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর অপমৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। ২০২৩ সালে ৭১টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসকল অপমৃত্যুর ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় ৭১টি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :