মৌলভীবাজারে শীত ও ঘন কুয়াশায় বোরো চাষ ব্যাহত

মৌলভীবাজারে শীত আরও বেড়েছে। কমেছে তাপমাত্রার পারদ। রবিবার সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গল পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, আগামী দুই তিন দিন তাপমাত্রার তেমন কোনো পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে ব্যাঘাত ঘটছে বোরো চাষাবাদে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হাকালুকি, কাউয়া দিঘী ও হাইল হাওরসহ মৌলভীবাজারের হাওর-সমতল মিলিয়ে বোরো ধানের ফলন বাড়াতে এ বছর বাড়তি টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিপুল সংখ্যক কৃষককে সার ও বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছে । কিন্তু হাড়কাঁপানো শীতের কারণে হাওর এলাকায় বোরো চাষীরা মাঠে নামতে পারছে না। মৌসুমের শুরুতে শীত আর ঘন কুয়াশায় চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বোরো আবাদ । নির্দিষ্ট সময়ে ধান রোপণ করতে না পারায় অনেক কৃষকের চারা বীজতলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । এমনকি ধান সঠিক সময়ে রোপণ করতে না পারায় আগাম বন্যা কবলিত সিলেটের হাওর এলাকায় এ বছর বোরো ধান সময়মতো ঘরে তোলা যাবে কী না এ নিয়েও কৃষকদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কাও করছেন তারা।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত মৌসুমে ৫০ হাজার হেক্টরের মতো জমিতে বোরো ধান লাগানো হয়েছিল। ধানের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে চলতি মৌসুমে ৬০ হাজার ৩শ ৫৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে জেলার ৭ উপজেলায় প্রায় ৪৭ হাজার কৃষককে সার ও বীজসহ বিভিন্ন কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে এখন ধান রোপণ করা যাচ্ছে না। অনেক কৃষকের চারা বীজতলায় নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি, কাউয়া দিঘী ও হাইল হাওরসহ নিম্নাঞ্চল অনেক সময় এপ্রিল মাসেই প্লাবিত হয়ে যায়। যে কারণে এই এলাকায় ডিসেম্বর মাসে বোরো ধান লাগানো শেষ করতে হয়। আর এপ্রিল মাসের শুরুতে বোরো ধান ঘরে তুলে আনতে হয়।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের উলুয়াইল গ্রামের কৃষক পরিবারের শেখ ইমাদ মিয়া জানান, কাউয়া দিঘী হাওর এলাকায় তারা ১৭ একরের মতো জমিতে বোরো ধান লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক শতক জমিতেও ধান লাগানো যায়নি। প্রথমে পানি পাওয়া যায়নি। আর এখন হাড়কাঁপানো শীত। প্রতিদিন অপেক্ষা করেন একটু উষ্ণতার জন্য। কিন্তু হিমেল হাওয়ার কারণে মাঠে নামা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক (ডিডি) মো. শামছুদ্দিন আহমেদ জানান, এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ হাজার ৩শ ৫৭ হেক্টর জমি। শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ধান সঠিক সময়ে রোপণ করা যাচ্ছে না স্বীকার করে তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তির যুগ। আমরা সেটা পুষিয়ে নিতে পারবো।
(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন