ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গৃহবধূ নিখোঁজ, শ্বশুর-শাশুড়িসহ আটক ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গত একমাস ধরে খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) নামে এক গৃহবধূ নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার ভোর রাতে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর থানা পুলিশের সহায়তায় ওই উপজেলার মনতলা এলাকা থেকে গৃহবধূর ননদ জিয়াছমিন আক্তার পপিকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে শনিবার বিকালে বিজয়নগর উপজেলার আমতলী বাজার থেকে গৃহবধূ খাদিজা আক্তার ময়নার শ্বশুর মো. আজিজুল ইসলাম রমজান (৫৫) ও শাশুড়ি রহিমা বেগমকে (৫১) গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত গৃহবধূর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পুলিশ বলছে, ভিকটিমকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এটি কি নিখোঁজ না গুম তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ বছর পূর্বে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মো. রমজান মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী রাসেল মিয়ার সঙ্গে একই উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতুরপুর গ্রামের সেলিম মিয়া বড় মেয়ে খাদিজা আক্তার ময়নার (২৫) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। গৃহবধূ ময়না তার ৫ বছর বয়সী কন্যা সন্তান তাবাচ্ছুমকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করতো।
গত ১৯ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) তার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। এক মাস যাবত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ মেয়ের সন্ধান না পেয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন নিখোঁজ ময়নার মা সুমি বেগম।
এদিকে নিখোঁজ ময়না তার প্রবাসী স্বামীর কাছে মোবাইলে একটি ভয়েস বার্তা পাঠায়। ওই ভয়েস বার্তায় গৃহবধূ জানায়, ‘আমারে কীভাবে ভুলে থাকতেছ, আমাকে কি বাঁচাইবানা, আমি কোথায় আছি বলতে পারছি না। চারপাশে পাহাড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডা। আম্মা (শাশুড়ি) এবং আপা (স্বামীর ছোট বোন) জানে আমি কোথায় আছি। আমার মোবাইল পপি আপা কোথায় জানি রাখছে। তুমি পপি আপার সঙ্গে কথা বল। এখানে অনেক ঠান্ডা।’
স্বামীর কাছে ইমুর মাধ্যমে খাদিজা আক্তার ময়নার পাঠানো ভয়েস বার্তাটি রাসেল মিয়া ময়নার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে ময়নার মা থানায় অভিযোগ করেন।
রোববার সন্ধ্যায় নিখোঁজ গৃহবধূর মা সুমি বেগম বাদী হয়ে বিজয়নগর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় শ্বশুর শাশুড়ি ও ননদকে আসামি করা হয়।
নিখোঁজ গৃহবধূর মা ও মামলার বাদী সুমি বেগম বলেন, আমার মেয়েকে দ্রুত উদ্ধারের জন্য পুলিশের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, অপহরণ মামলায় এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। গৃহবধূকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন