জমি বিক্রির টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে তিনদিন পর মরদেহ দাফন!

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:০৯
অ- অ+

গাইবান্ধায় জমি বিক্রির টাকার ভাগাভাগি নিয়ে ভাই-ভাতিজার দ্বন্দ্বে বাড়ির উঠানে পড়ে থাকা মোতাহার হোসেন মুন্সির (৭৫) মরদেহ জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের শাকোয়া মাঝিপাড়া গ্রামে‌ পুলিশি হস্তক্ষেপে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে তিনি মারা যান গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মোতাহার হোসেন মুন্সী ঢাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তরে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বেশ কয়েক বছর আগে তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান। তার স্ত্রী মাসুমা বেগমকে নিয়ে তিনি ধানমন্ডির কলাবাগান এলাকায় থাকতেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। কিছুদিন আগে মোতাহার হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন পড়ে। তাই তার ঢাকায় থাকা এক খন্ড জমি তিনি দুই কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এরপর গত এক সপ্তাহ আগে অসুস্থতা বেশি হওয়ায় তাকে ঢাকার আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর পরদিন মোতাহার হোসেনের মরদেহ দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সযোগে পলাশবাড়ী উপজেলার শাকোয়া মাঝিপাড়া গ্রামে আনেন তার স্ত্রী। পরে ওই মরদেহ দাফনে বাধা দেয় মোতাহার হোসেনের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম মুন্সী ও তার ভাতিজা হাবিবসহ পারিবারের কয়েকজন।

এ সময় তারা মাসুমা বেগমের কাছে মোতাহার আলীর কাছে থাকা জমি বিক্রির ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা কোথায় কোন ব্যাংকে আছে তা জানতে চান। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে মরদেহ নিজ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকে। স্থানীয়রা চেষ্টা করেও দ্বন্দ্বের নিরসন করতে পারেনি। অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মরদেহ দাফন না হওয়ার ঘটনা জানতে পারেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পলাশবাড়ী থানা পুলিশ।

পরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বৈঠক করে উভয়কে নিয়ে একটি সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তাদের উপস্থিতিতে নিজ বাড়ির উঠানে জানাজা নামাজ শেষে মোতাহার আলীর মরদেহ দাফন করা হয়।

ভাই-ভাতিজাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে মোতাহার আলী তার নিজ নামের জমি দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করেন। সেই টাকা স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রাখেন। পরে মাসুমা বেগম গোপনে ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা উত্তোলন করেন।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিঃসন্তান মোতাহার আলীর ভাই-ভাতিজারা দাফনে আপত্তি জানানোর কারণে মরদেহ বাড়ির উঠানে ছিল। দেনাপাওনা এবং সম্পদ বিক্রির প্রায় দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা নিয়ে তার স্ত্রী মাসুমা বেগমের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান তার পরিবারের লোকজন। অবশেষে উভয়কে নিয়ে পারিবারিকভাবে অর্থ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। মোতাহার আলীর স্ত্রী মাসুমা বেগম তার ভাই-ভাতিজাদের ৬০ লাখ টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন। এরপরই নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

পলাশবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ জানান, টাকা‌ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তিন দিনেও মরদেহ দাফন হয়নি এমন খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে পারিবারিকভাবে অর্থ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে সমঝোতা হওয়ায় দুই দুই পক্ষকে বুঝিয়ে রাতে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
অতিরিক্ত সচিব আরিফুজ্জামানসহ ৩ জনকে ওএসডি
যশোরে পূর্ব শত্রুতার জেরে যুবক খুন 
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অর্ধ বার্ষিক বিজনেস রিভিউ মিটিং অনুষ্ঠিত
চাঁদা না দেওয়ায় পল্লবীতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবিদ্ধ একজন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা