সংরক্ষিত এমপি: সুযোগ সুবিধা একই, ক্ষমতা সীমিত

জাফর আহমেদ, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৯ | প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৩

জাতীয় নির্বাচন শেষ করে সরকার গঠন করার পর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য শুরু হয় তোড়জোড়। সংবিধান অনুযায়ী গেজেট হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এই নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে।

তবে জনগণের ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পরও কেন সংরক্ষিত আসনে নারীদের সংসদ সদস্য করা হয়। আর তারা কোন এলাকার হয়ে কাজ করবেন। সংসদে তাদের ভূমিকা কী, একজন এমপি হয়ে কী কী কাজ করতে পারেন বা তাদের কাজ করার পরিধি কতটুকু। কারা সংরক্ষিত আসনের এমপি হতে পারবেন, এই নিয়ে রাজনৈতিক মহল ছাড়াও বিভিন্ন মহলে চলছে নানা আলোচনা।

এই বিষয় নিয়ে জাতীয় সংসদের একাধিক হুইপের সঙ্গে কথা বলে ঢাকা টাইমস। তারা জানান, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্যরা খুব একটা কার্যকর ভূমিকা রাখার সুযোগ পান না। যারা ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল হয়ে থাকে সংসদে এসব রাজনৈতিক দল থেকে রাজনৈতিক পরিবার থেকেই সাধারণত সংরক্ষিত আসনের সদস্য নিবার্চন করা হয়। যেহেতু জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, জনপ্রতিনিধিদের ভোটে (এমপি) সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হন, তাই তাদের নির্দিষ্ট এলাকায় কাজ করার সুযোগ কম। সংসদ কার্যক্রমেও অবদান রাখার সুযোগ কম হয়। কেননা সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের কার্যপরিধির ব্যাপ্তি বা দায়িত্বের বিষয়ে সংবিধানে আলাদাভাবে উল্লেখ নেই। তবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মতোই সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন সংরক্ষিত আসনের সদস্যরা। মূলত রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করতে এবং নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করা হয়।

সংবিধানের চতুদর্শ সংশোধনী অনুযায়ী, ২০০৪ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনে নির্ধারণ করা হয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে (সে সময় ৪৫টি) একটি দল থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক নারী সাংসদকে সুযোগ দেয়া হবে; এবং তা হবে সংসদে ওই দলের কতজন প্রতিনিধি রয়েছে তার অনুপাতে।

অর্থাৎ একটি রাজনৈতিক দলের ৬ জন যদি নির্বাচিত সদস্য থাকে, তাহলে ওই দল থেকে একজন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হবেন। তখন এই সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনে এই রাজনৈতিক দল থেকে একাধিক নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন এবং সেই দলের নির্বাচিত সদস্যদের ভোটে বিজয়ী হয়ে সংরক্ষিত আসনের সদস্য হতে পারবেন।

জাতীয় সংসদের হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু ঢাকা টাইমসকে বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের যে অধিকার, সংরক্ষিত নারী এমপিদেরও একই অধিকার। তারা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত না, ওনারা এমপিদের ভোটে নির্বাচিত। আইন অনুযায়ী সংরক্ষতি নারী এমপিদের একই ভ্যালু। নির্বাচনি এলাকার কার্যক্রমে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা হয় এবং টিআর, কাবিখা এইসবে তাদের বরাদ্দটা কম থাকে, কারণ তাদের যেহেতু সরাসরি এসব দেখাশোনা করতে হয় না। বাকি সব কাজই এক। মিটিংয়ে সেইম, সুযোগ-সুবিধাও সেইম। তারাও তো জাতীয় সংসদেরই এমপি। তাদের সরাসরি কোনো নির্বাচনি এলাকা না থাকলেও দলের পক্ষ থেকে তাদের কোনো না কোনো নির্বাচনি এলাকায় দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তবে নির্দিষ্ট করে না। তারা যদি কোনো নির্বাচনি এলাকায় বরাদ্দ করাতে চান তাহলে পারবেন। তবে স্থানীয় এমপিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ঢাকা টাইমসকে বলেন, সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারী সংসদ সদস্য এবং সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যগণের মর্যাদা, সংসদীয় কার্যক্রম একই ধরণের। তারা সংসদ কার্যক্রমে সংবিধান ও কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী একই ধরণের কার্যক্রম করবেন। কোনো ক্ষেত্রেই তাদের বাধা নেই। তবে সংরক্ষিত সংসদ সদস্যগণকে নির্দিষ্ট কোনো নির্বাচনি এলাকার দায়িত্ব প্রদান করা হয় না। তারা স্বীয় বিবেচনা মোতাবেক দেশের যেকোনো প্রান্তে জনসেবামূলক কার্যক্রম এবং দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন। তাদের অনুকূলে বরাদ্দসমূহ দেশের যেকোনো এলাকার জনস্বার্থে আইন ও বিধির আওতায় ব্যয় করতে পারেন। নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। তবে, দলীয়ভাবে তারা যেন সরাসরি নির্বাচিত কোনো সংসদ সদস্যের সঙ্গে বৈরিতা না করেন সেই বিষয়ে তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়।

আইন অনুযায়ী সাধারণ নির্বাচনের ফলের গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।

এর আগে আইন অনুযায়ী প্রাপ্ত ৪৮টি সংরক্ষিত নারী আসনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আর বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনয়ন দিয়েছে দুজনকে। ১৪ মার্চ ভোটের দিন রাখা হলেও মনোনয়নের বাইরে কারো প্রার্থী হওয়ার সুযোগ না থাকায় ভোটের আর প্রয়োজন পড়ে না। তাই ২৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার দিনই দল থেকে মনোনীত প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/জেএ/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়ায় লাভের মুখ দেখা নিয়ে শঙ্কায় মৃৎশিল্পীরা

আরও এক মিয়ার কাহিনী

‘বাবা তো ম‌রে গে‌ছে, ক‌বে আস‌বে?’

ডিসি নিয়োগ বিতর্কে জনপ্রশাসনের দুই যুগ্ম সচিবকে নিয়ে সিদ্ধান্ত কী? বঞ্চিতদের নিয়ে বসছেন সিনিয়র সচিব

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আলী আযম যেসব কারণে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে

অসীম সাহসিকতায় তারা লড়েছেন, এখন ভাসছেন প্রশংসায়

সেবাপ্রার্থী প্রবাসীদের পদে পদে হয়রানি, ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসে বেপরোয়া ‘মৌসুমি সিন্ডিকেট’

ঢামেকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি: জরুরি বিভাগে চিকিৎসাহীন বসে আছেন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী

বাংলাদেশে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান অবশ্যম্ভাবী: মুজিবুর রহমান মঞ্জু

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের যে কাণ্ড এখনো আলোচনায়

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :