মেট্রোরেলে কণ্ঠ দেওয়া অরিন যেভাবে জনপ্রিয় হলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৭| আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৮
অ- অ+

রাজধানী ঢাকার নাগরিকদের স্বস্তি দিতে যানজটকে পিছনে ফেলে ছুটে চলেছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। রাজধানীবাসীর যাতায়াতের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে এখন মেট্রোরেল। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৪০ মিনিটেরও কম সময়ে উত্তরা-মতিঝিল ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দূরত্বের পুরো রুট ভ্রমণ করছে। এ রুটে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারছে। মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেনের ছয়টি কোচের মধ্যে একটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত এবং অন্য কোচে নারী-পুরুষ একসঙ্গে ভ্রমণ করছে। মেট্রোরেল মানুষের জীবনধারা পরিবর্তন করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ভয়াবহ যানজটের নগরে মেট্রোরেল দেখিয়েছে আশার আলো।

স্বপ্নের মেট্রোরেলের ছোঁয়া ও সুফল এখন বাস্তবে পাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এই মেট্রোরেলের জনপ্রিয়তা গোটা দেশে সারা ফেলেছে। তবে মেট্রোরেল চলাচলের সময় দিকনির্দেশনার জন্য কিছুক্ষণ পরপর সুমিষ্ট নারী কণ্ঠের ভয়েস শোনা যায়। যা নিয়ে কৌতুহলের কমতি নাই জনসাধারণের মাঝে। অনেকেই আবার ভেবেছেন হয়তো এটি মেশিন জেনারেটেড ভয়েস। তবে মেট্রোরেলে সুমিষ্ট নারী কণ্ঠ যিনি দিয়েছেন তার পুরো নাম কিমিয়া অরিন।

কিমিয়া অরিন বাংলাদেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ইংরেজি সংবাদ পাঠিকা হিসেবেও কাজ করেছেন। কাজ করেছেন বাংলাদেশ বেতারেও।

দেশে ৯ বছর কাজ করার পর তিনি বর্তমানে মাস্টার্স করার জন্য কানাডাতে অবস্থান করছেন। আগামী বছর পড়াশোনা শেষ করবেন কিমিয়া। তার পরিবারে রয়েছেন স্বামী এবং ছোট ভাই। কিমিয়ার স্বামীর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি রয়েছে।

মেট্রোরেলে ভয়েস নিয়ে মানুষের কৌতুহল নিয়ে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে আমার বন্ধুরা আমাকে ‘স্ক্রিন শট’ পাঠাত যে এটা কি আসলেই মানুষের ভয়েস না কি মেশিন জেনারেটেড ভয়েস। শুরুর দিকে সবাইকে বললে কেউ বিশ্বাস করতো না যে এটা আমার ভয়েস। এমন কি আমার কাছের মানুষও আমার ভয়েস চিনতো না। মেট্রোরেলে ভিডিও যে মানুষ আপলোড করতো, আমি সেই লিংক দিয়ে বলতাম এটা আমি, এই ভয়েস আমি দিয়েছি।

কিমিয়া অরিন বলেন, অনেকে মজা করে সামাজিক মাধ্যমে লিখত এই আপা কি বাস্তবে আছে, না কি এটা কম্পিউটারে করা। শুরুতে যখন আমি মেট্রোরেলে নিজের ভয়েস শুনি, খুবই এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম। সবাই আমার দিকনির্দেশনা শোনার জন্য অপেক্ষা করছে, এটি দারুণ ব্যাপার মনে হয়েছে। আমি দেশের বাইরে থাকলেও যখন মনে পড়ে দেশের লোকজন আমার ভয়েসের জন্য অপেক্ষা করছে, তখন খুবই ভালো লাগে। আমি এতো দূরে থেকে দেশের জন্য সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছি, এটা মনে পড়লেই ভালো লাগা কাজ করে।

ভয়েস দেওয়ার শুরুর গল্প হিসেবে কিমিয়া অরিন বলেন, প্রথমদিকে বিটিভির একজন রিপোর্টার আমাকে বললেন, আপনি মেট্রোরেলে ভয়েস দিতে চাইলে সিভি দিতে পারেন। আমি তার কথায় সিভি দেই। কাজের স্যাম্পল হিসেবে আমার ইউটিউব থেকে ভিডিওগুলোও দেওয়া হয়। শুরুতে হয়েছিল টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের কাজ। তখন ছিল করোনাকালীন সময়ের মাঝের দিক। অনেকবার ভয়েস দেওয়ার পর নানাভাবে বিশ্লেষণ করে সর্বশেষ আমার ভয়েসটিই নির্বাচিত হয়।

কিমিয়া অরিন বলেন, প্রথমবার প্লাটফর্মের জন্য ভয়েস নেওয়ার পর ট্রেনের জন্য ভয়েসের কাজ করি। প্লাটফর্মের ভয়েসের জন্য অনেক কষ্ট করা হলেও ট্রেনের জন্য সে রকম হয়নি। আর শেষের দিকে আমি এলিভ্যাটেড ও লিফটের জন্য কাজ করেছি।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।

(ঢাকাটাইমস/২৪ ফেব্রুয়ারি/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ
জবি শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় গাবতলী পরিবহনের ১১ বাস আটক
ঢাকার দুই সিটিতে কাউন্সিলর পদে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে ইশরাকের হুঁশিয়ারি
জয়পুরহাটে প্রাইভেটকার-ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ২
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা