২২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে: মেয়র তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:২৬ | প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫৯

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ২২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জানিয়েছেন এই সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বুধবার সকালে ‘ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের আওতায়’ ধানমন্ডি ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয়তলা ভিত বিশিষ্ট ছয়তলা নতুন ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সুসংবাদ দেন মেয়র।

তাপস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে তিনি স্মার্ট পর্যায়ে নিয়ে যাবেন। আমাদের স্মার্ট বিদ্যালয় হবে, স্মার্ট শিক্ষার্থী হবে এবং স্মার্ট নাগরিক হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা কলাবাগান, মতিঝিলের দিলকুশা, নবাব কাটরা ও শ্যামপুরে চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছি।’

মেয়র জানান, ‘আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার প্রত্যেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নতুন ভবন পাবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ২২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার-পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’

এ সময় বায়ু দূষণ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ‘বাংলাদেশে যে জীবাশ্ম জ্বালানি আমরা ব্যবহার করি সেটি অত্যন্ত নিম্নমানের এবং আমাদের দেশে বায়ু দূষণের মূল কারণই হলো নিকৃষ্ট মানের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। ঢাকা শহরে যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হয় সেটিতে সালফারের যে মাত্রা তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি।’

ইউরোপের উদাহরণ টেনে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ইউরোপের জীবাশ্ম জ্বালানিতে সালফারের পরিমাণ থাকে ১৫ পিপিএম এর নিচে। সেখানে আমাদের দেশে তা ৫০ পিপিএম ঊর্ধ্বে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৫০০ পিপিএম ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সেগুলো অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর এবং মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’

তাপস বলেন, ‘আমরাশিগগিরই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, পেট্রো বাংলা, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা পেট্রোলিয়াম, পদ্মা পেট্রোলিয়াম, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দেব। তারা যেন বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। আমরা চাই না, ঢাকা শহরে এ ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি আর ব্যবহৃত হোক। আমরা চাই, ঢাকা শহরে ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বালানিতে সালফারের পরিমাণ ৫০ পিপিএম এর নিচে থাকবে। তাহলেই বায়ু দূষণের মূল যে কারণ তা থেকে আমরা পরিত্রাণ পাবো। আমাদের নতুন প্রজন্ম স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠবে পারবে।’

ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ সিটি প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রেখেছে উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণের জন্য সূচি অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। প্রথমত, আমরা নিয়মিতভাবে মূল সড়কগুলোতে সকাল থেকে পানি দিচ্ছি। দ্বিতীয়ত, আমাদের যে উড়াল সেতু আছে সেগুলো আমরা সাকার যন্ত্র দিয়ে পুরোটা পরিষ্কার করছি। তারপরেও আমরা লক্ষ্য করি, নির্মাণাধীন ভবনসহ নানাবিধ সংস্কার কাজের ফলে ধুলাবালি উৎপন্ন হচ্ছে। আমরা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছি, যেন ভবন নির্মাণকালে অবশ্যই বেষ্টনী দিয়ে সেগুলোকে ঢেকে রাখা হয়। যাতে করে ধুলাবালি বাইরে না আসে।’

মেয়র জানান, ‘আমাদের সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণের কারণে যে ধুলা উৎপন্ন হয়, সেখানে যে মাটি অপসারণ করা হয়, সেগুলো যেন দীর্ঘদিন পড়ে না থাকে, সে লক্ষ্যে আমরা ঠিকাদারদের নির্দেশনা দিয়েছি। ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

এ সময় তাপসের সঙ্গে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন। এরকম নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই। আজ এই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের ফলে স্মার্ট শিক্ষার্থী গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা ঢাকা-১০ আসনকে করে তুলব ১০ এ ১০। আমরা শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্প সবকিছুকে একত্রিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।’

অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘একটা আদর্শ স্কুলের যে সব সুযোগ সুবিধা থাকা দরকার, আমরা তা অন্তর্ভুক্ত করে স্কুলগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মিলে প্রায় ৩০টির মতো স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। আজকে চারটি স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে। আমাদের টার্গেট রয়েছে, এই জুন মাসের মধ্যে ১০টি স্কুলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার।’

তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যে শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে, তা দূর হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে গতবছর আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছি। আগামী জুন মাসের মধ্যে আমরা আরও ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেব।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে নতুন এসব ভবন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সহয়তার নির্মাণ করা হবে বলে অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান।

পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র বংশালের নবাব কাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মতিঝিলের দিলকুশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শ্যামপুরে খোকন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাহবুবুর রহমান, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং সংরক্ষিত আসনের নারগিস মাহতাব প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/এআই/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :