বেইলি রোডের আগুনে স্বপ্ন পুড়লো বরিশালের নাহিয়ানের

বরিশাল ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০১ মার্চ ২০২৪, ২১:০৩
অ- অ+

মাত্র চার মাস আগে বিশ্বসেরা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বুয়েটে ক্লাস শুরু করেছিলেন বরিশালের সন্তান নাহিয়ান আমিন। স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও। কিন্তু বৃহস্পতিবার ঢাকার বেইলি রোডের নিষ্ঠুর আগুনে বিস্ফোরিত সিলিন্ডারের লোহার অংশ নাহিয়ানের মুখে আঘাত করে। এতে মৃত্যু হয় নাহিয়ানের। এর সঙ্গে মৃত্যু হয় তার স্বপ্নের।

মেডিসিন ব্যবসায়ী বাবার একমাত্র ছেলের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না কেউ।

গতকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থামলে জিলা স্কুলের শিক্ষক-সহপাঠী প্রতিবেশীরা শেষবারের মতো বিদায় দেন নাহিয়ানকে। পরে লাশবাহী গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর পলিটেকনিক রোডে তার বাড়িতে।

সেখানে লাশবাহী গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে নাহিয়ানের মা-বাবা, বোন এবং স্বজনরা শেষবারের মতো তাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর বিকালে পলিটেকনিক জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নগরীর মুসলিম গোরস্থানে দাদা-দাদির পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় নাহিয়ানকে।

নাহিয়ান বরিশাল নগরীর পলিটেকনিক রোডের রিয়াজুল কবিরের একমাত্র ছেলে। দুই ভাইবোনের মধ্যে নাহিয়ান আমিন ছোট। বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

নাহিয়ান ২০২০ সালে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০২২ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তার একমাত্র বোন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী।

নিহতের ভগ্নিপতি মোহাম্মদ বাবু বলেন, ‘নাহিয়ানের দুর্ঘটনার বিষয়ে রাত ১টায় আমরা খবর পাই। বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি, নাহিয়ান হোটেলে উপস্থিত হওয়ার মিনিটের মধ্যে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। সময় সিলিন্ডারের লোহার অংশ নাহিয়ানের মুখমণ্ডলে আঘাত করে। তার শরীরের কোনো অংশে আগুনের সামান্যতম স্পর্শও লাগেনি। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে শুক্রবার সকালে বুয়েটে নেওয়া হয় নাহিয়ানের মরদেহ। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে লাশ নিয়ে আসা হয় বরিশাল নগরীতে।

নিহতের মামাতো ভাই ডা. নাভিদ নূর বলেন, ‘তার স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। আমাদের পরিবার নয়, দেশ একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারালো। ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যু কারো কাম্য নয়। ওই খাবারের দোকানের সিঁড়ি এবং লিফটে যদি বড় স্পেস থাকতো তাহলে অনেক মানুষ বেঁচে যেত। কিন্তু সে কথা এখন বলে আর লাভ নেই। যে গেছে সে তো আর ফিরে আসবে না।

স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান খান বলেন, নাহিয়ান বরাবরই খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। আমরা তাকে নিয়ে গর্ব করতাম। তার স্বপ্ন ছিল বিশ্বসেরা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বলের। কিন্তু হঠাৎ দুর্ঘটনায় সেই স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেলো।

প্রতিবেশী লিয়াকত হোসেন বলেন, নাহিয়ান এলাকার ভালো ছেলেদের মধ্যে একজন ছি। ওর মত ভদ্র ছেলেকে হারিয়ে আমরা বাকরুদ্ধ। তার এভাবে চলে যাওয়া কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দোষীদের বিচার দাবি করছি।

(ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজনীতিতে অভিভাবক দল হিসেবে আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি: অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা