গৃহকর্মীর মৃত্যু: নির্বাহী সম্পাদক আশফাকুল হককে অব্যাহতি ডেইলি স্টারের

এক গৃহকর্মীর মৃত্যুর মামলায় কারাগারে থাকা নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হককে অব্যাহতির নোটিশ দিয়েছে ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষ। অবিলম্বে এই নোটিশ কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে এই নোটিশের কথা বলা হয়েছে।
ডেইলি স্টার বাংলা ওয়েবসাইটে ‘অব্যাহতির নোটিশ’ শিরোনাম দিয়ে বলা হয়েছে, ‘ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্য ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হককে অব্যাহতির নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই নোটিশ অবিলম্বে কার্যকর বলে গণ্য হবে।’
নয় তলার ‘বাসা থেকে নিচে পড়ে’ প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছর বয়সী এক গৃহকর্মীর মৃত্যুর দুই মাসের মাথায় এ পদক্ষেপ নিল ইংরেজি দৈনিকটি।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুরের আশফাকুল হকের আট তলার ‘বাসা থেকে পড়ে মারা যায়’ ওই কিশোরী গৃহকর্মী। ভবনের নিচে তার লাশ মেলার পর স্থানীয়রা ‘প্রীতিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে এলাকায় বিক্ষোভ করেন। প্রীতির বাবা লোকেশ উরাং পরদিন মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার এখন কারাগারে আছেন। কয়েক দফায় তাদের জামিন নাকচ হয়েছে আদালতে।
এর আগে ২০২৩ সালের ৬ অগাস্ট ওই বাসা থেকে পড়ে যায় ৭ বছর বয়সী শিশু গৃহশ্রমিক ফেরদৌসী। প্রাণে বাঁচলেও তার শারীরিক অবস্থা এখনও ভালো নয়। ওই ঘটনায় মামলা হলেও সৈয়দ আশফাক ও তার স্ত্রী মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে গেছেন ২ লাখ টাকায় আপসরফার মাধ্যমে।
ঘটনার পর থেকে প্রীতি উরাংয়ের ঘটনায় বিচার চেয়ে করা বিভিন্ন মানববন্ধনে ও বিবৃতিতে আশফাককে ডেইলি স্টার থেকে অব্যাহতির দাবি ওঠে। এ নিয়ে ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম তার অবস্থান তুলে ধরে ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
প্রীতির মৃত্যুর পর ঢাকা ও মৌলভীবাজারে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে দোষীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে। কিশোরী এ গৃহকর্মীর মৃত্যুর পর থেকে মানবাধিকার কর্মীরা আশফাকের বিরুদ্ধে ডেইলি স্টারের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর বাদ দেওয়া হলেও নোটিসে এর কারণ ব্যাখ্যা করেনি ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষ।
ডেইলি স্টারের নোটিশে বলা হয়, ‘সৈয়দ আশফাকুল হক ১৯৯৩ সালে দ্য ডেইলি স্টারের ক্রীড়া বিভাগে যোগদান করেন। এরপর তিনি ক্রমান্বয়ে ক্রীড়া সম্পাদক, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, প্রধান বার্তা সম্পাদক এবং অবশেষে ২০১৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।’
(ঢাকাটাইমস/০২এপ্রিল/কেএম)

মন্তব্য করুন