নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ডেউফা নদীতে চলছে বালু উত্তোলন

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:০৪ | প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:০৩

প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শেরপুরের শ্রীবরদীর ডেউফা নদী থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। স্থানীয়রা বলছেন, শুকনো মৌসুমে নদীর বুক থেকে খুবলে নেওয়া হচ্ছে বালু। ফলে নদীর তলদেশে তৈরি হচ্ছে খানাখন্দ। এছাড়া বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক চলাচলে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে কাঁচা সড়ক আর ভাঙনের মুখে রয়েছে নদীর দু'পাড়ের শতশত ঘরবাড়ি।

অন্যদিকে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।

সরেজমিনে গেলে উপজেলার বাবেলাকোনা গ্রামের কৃষক আইনুদ্দীন শেখ বলেন, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পোড়াকাশিয়া হয়ে নেমে এসেছে সোমেশ্বরী নদীর শাখা ডেউফা নদী। এই নদী বাবেলাকোনা, মেঘাদল ও কর্ণঝোড়া বাজারের পাশ দিয়ে প্রবেশ করেছে শ্রীবরদীর অভ্যন্তরে।

আইনুদ্দীন শেখ আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ডেউফা নদীর বাবেলাকোনা এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ কারণে কর্ণঝোড়া থেকে বাবেলাকোনা, হারিয়াকোনা ও দীঘলাকোনা গ্রামের সীমান্ত সড়কের বেশ কিছু অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে। ফলে ওই পথে চলাচলকারীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে বিকল্প সড়কে। সম্প্রতি বাবেলাকোনা ব্রিজটিও পড়েছে হুমকির মুখে। এখন সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ড এরিয়া থেকেও উত্তোলন করা হচ্ছে বালু।

স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী হুমায়ুন মিয়া বলেন, প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ডেউফা নদী থেকে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে বনাঞ্চল ঘেরা বাবেলাকোনা গ্রামের ডেউফা নদীর দু'পাড়ের শতশত বাসিন্দা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সিংগাবরুনা ইউনিয়নের মেঘাদল গ্রামের বালু মাসুদ, বগুলাকান্দি গ্রামের ইয়াছিন ও কর্ণঝোড়া গ্রামের বিপ্লব দীর্ঘদিন যাবত ডেউফা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে বালু উত্তোলন। সারা রাত ট্রাক ও ট্রলি ভরে এসব বালু পাঠানো হয় বিভিন্ন স্থানে।

কর্ণঝোড়া গ্রামের ইয়ারউদ্দীন বলেন, বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলেই তারা আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা করে। হাট বাজারে যেতে দেয় না। আমাদের কাউকে রাস্তায় পেলেই মারধর করে।

অভিযোগ সম্পর্কে বালু ব্যবসায়ী মাসুদ বলেন, আমি বালুর ব্যবসা করি। তাই নদী থেকে বালু উত্তোলন করি।

স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক যোগেশ মারমা বলেন, ট্রাক ও ট্রলি দিয়ে বালু পরিবহনের কারণে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা হেঁটেও চলাচল করতে পারে না। অন্যান্য যানবাহন চলাচলেও কষ্টকর হয়ে পড়ে।

বাবেলাকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও আদিবাসী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র মান্দা বলেন, গ্রামের কেউ বালু উত্তোলনে বাঁধা দিলেই তারা তাকে অপমান করে। এজন্য নিজেদের ক্ষতি নীরবেই মেনে নেই।

সিংগাবরুণা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকরুজ্জামান বলেন, বালু মাসুদের চেয়েও বিপ্লব ভয়ংকর। তারা কিছুই মানে না।

ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা সাদেক হোসেন বলেন, বালু মাসুদ একাই না, আরো অনেকে এর সাথে জড়িত। তবে বালুসহ কোনো গাড়ি পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

শ্রীবরদীর ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, আমরা বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

(ঢাকা টাইমস/১৯এপ্রিল/প্রতিনিধ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :