বগুড়ায় কারাগারের ছাদ ফুটো করে পালানো ৪ কয়েদি ২ দিনের রিমান্ডে

বগুড়ায় কারাগারের ছাদ ফুটো করে পালানো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ কয়েদির প্রত্যেকের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার বেলা ১১টায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুমিন হাসান তাদের এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুজন মিয়া বলেন, কয়েদিদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রিমান্ডে কারাগারের ছাদ ফুটো করে পালানো ঘটনায় তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাতে বগুড়া কারাগারের জাফলং নামক কমডেমড সেলের ছাদ ফুটো করে পালিয়ে যান ৪ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি। পরে ওই রাতেই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ শহরের চেলোপাড়া এলাকার চাষী বাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের নামে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেছে বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার ফরিদুর রহমান রুবেল।
কারাগার পালানো কয়েদিরা হলেন, কাহালু পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মান্নানের ছেলে জাকারিয়া। ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল কাহালুর রোস্তম চাপড় গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্কুলপড়ুয়া ছেলে নাঈমুল ইসলাম নাঈমকে (১৩) অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় ও হত্যাকাণ্ডের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন জাকারিয়া। মুক্তিপণের পাঁচ লাখ টাকা না পেয়ে শিশুটিকে ইটভাটায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলার পর ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাফিজুর রহমান রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জাকারিয়া ও তার সহযোগী ডালিমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
বাকি তিন আসামি হলেন- কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার আজিজুল হকের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম মঞ্জুর (৬০), বগুড়া জেলার সদর থানার মো. ইসমাইল শেখের ছেলে মো. ফরিদ শেখ (২৮) ও নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার ইসরাফিল খাঁর ছেলে আমির হামজা (৩৮)।
চার আসামির সেলের ছাদ ফুটো করে পালানোর ঘটনায় বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের গঠিত ৬ সদস্যের এবং অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক শেখ সুজাউর রহমান সুজার নেতৃত্বে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) থেকে জেলা প্রশাসন ও ডিআইজি প্রিজনের গঠিত পৃথক কমিটি ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কারাগারের জেলার ফরিদুর রহমান রুবেলকে স্ট্যান্ড রিলিজ করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। তাকে রাজশাহী ডিআইজি প্রিজন কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। এর আগে একই অভিযোগে বগুড়া কারাগারের ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামান, প্রধান কারারক্ষী আব্দুল মতিনসহ ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া ৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।
(ঢাকা টাইমস/০৩জুলাই/এসএ)

মন্তব্য করুন