কুবিতে সাংবাদিকদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

কোটা সংস্কারের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনের অধিক সাংবাদিক পুলিশি হামলার শিকার হয়েছেন। এই ঘটনায় বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা।
শুক্রবার দুপুর ১২টায় বৃষ্টির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাভেদ রায়হানের সঞ্চালনায় ও সভাপতি ইকবাল হাসানের সভাপতিত্বে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার, অনুপ্রাস, বৃত্ত কুবিসহ অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত দৈনিক আজকের পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আতিকুর রহমান তনয় বলেন, 'গতকাল পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের উপর পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে পুলিশ টিয়ার শেল বা লাঠিচার্জ কীভাবে করে, সেটা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এভাবে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এমনকি গতকাল দায়িত্ব পালনকালে একজন পুলিশ সদস্য এমনও বলেছে যে, এই তুই কে? ভিডিও করছিস কেন? তখন দৈনিক আজকের পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি পরিচয় দিলে তিনি বলেন, 'আমরা ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের গুনি না।' এই বলে তিনি মারতে তেড়ে আসেন। পরবর্তীতে আমরা সহকর্মীরা এগিয়ে আসলে ঐ পুলিশ চলে যায়।'
সাম্প্রতিক দেশকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শারমিন আক্তার কেয়া বলেন, 'গতকাল আনসার ক্যাম্পের সামনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দায়িত্বরত সাংবাদিকদের উপরও পুলিশ হামলা চালায়। তাৎক্ষণিক হামলার প্রতিবাদ করলে তারা জানায় তদন্ত সাপেক্ষে সেটার বিচার করা হবে। আমরাও চাই, এটার সুষ্ঠু বিচার হোক। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।'
দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রকি উল হাসান বলেন, গতকাল পুলিশ সদস্য বলেছেন যে, 'আমরা ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের গুনি না।' সাংবাদিকতা যেখানে মহান পেশা, সেটার আঁতুড়ঘর হচ্ছে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা। অথচ পুলিশ প্রশাসন আমাদের গুনেন না। সাংবাদিকদের না গুনার একটা কারণ হতে পারে যে, তাদের যে সাবেক আইজিপি ছিল বেনজির আহমেদ, তার সকল দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করেছিলেন সাংবাদিকরাই। সেই ভয় থেকে হয়ত পুলিশের চক্ষুশূলে পরিণত হতে পারে সাংবাদিকরা। আমি সাংবাদিকদের নির্বিঘ্নে কাজ করার নিশ্চয়তা চাই।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক জনকণ্ঠের প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকবাল হাসান বলেন, 'আমার তিন সহকর্মী আহত হয়েছেন। তাছাড়াও একাধিক সাংবাদিককে পুলিশ কর্তৃক মানসিক হেনস্তা করা হয়েছে, যা গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। সাংবাদিকদের উপর এই হামলা এবং হেনস্তার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'
উল্লেখ্য, গতকাল ১১ জুলাই বিকাল ৩টার দিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করতে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের প্রথমে বাধা দেয়, পরে হামলা করে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক আমাদের সময়ের অনন মজুমদার, চ্যানেল আইয়ের সৌরভ সিদ্দিকী, দৈনিক ঢাকা টাইমসের এমদাদুল হক ও ক্যাম্পাস টাইমসের আল শাহরিয়ার অন্তু আহত হন।
(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/পিএস)

মন্তব্য করুন