বাংলাদেশকে নজিরবিহীন নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান সাবেক পাক ক্রিকেটারের
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর খানিক বিরতি দিয়ে চলতি মাসে বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করেই অক্টোবরে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে পাকিস্তান। আগামী বছর জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ম্যান ইন গ্রিনরা। এরপরেই দেশটিতে বসবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর।
বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর পাকিস্তানেও আন্দোলনের ডাক দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। চলমান এই পরিস্থিতিতে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে শঙ্কায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। দেশ থেকে যাতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সরে না যায়, সেই লক্ষ্যে সফররত দেশগুলোর নিরাপত্তা বলয় বাড়ানোর পরামর্শ সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার বাসিত আলী।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে বাংলাদেশকে। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটও। নতুন উদ্যম নিয়ে পাকিস্তান সফরে গিয়েছে টাইগাররা। দেশ পরিবর্তনের মতো পারফরম্যান্সেও পরিবর্তনের প্রত্যয় নিয়ে দেশ ছেড়েছে ক্রিকেটাররা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে বরণও করে নিয়েছে পাকিস্তান।
তবে বাংলাদেশের এ সফর নিয়ে স্বস্তিতে নেই পিসিবি। বাংলাদেশের মতো পাকিস্তানেও উত্তাপ ছড়াচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তাই সফররত দলের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত দেশটি।
পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তাই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। কোনো অঘটন ঘটলেই হাত থেকে ফসকে যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তাই দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পাকিস্তানে সফররত দলগুলোকে নিরাপত্তা প্রদানে জোর দিতে বলেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলী।
জুলাই মাসের শেষ দিকে নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে এবং গুম ঠেকাতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে বেলুচিস্তানের নাগরিক সমাজ। একইসময়ে আন্দোলন চলছে পেশোয়ারে। সেদিকে ইঙ্গিত করে বাসিতের মন্তব্য, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যেহেতু পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে, আর বাংলাদেশের পর ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজও সফরে আসবে। তাই আমাদের উচিত নিরাপত্তায় মনোযোগ দেওয়া। আল্লাহ না করুন, এসব সফরে কোনো ঘটনা ঘটলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এখানে (পাকিস্তান) খেলা হবে না। বেলুচিস্তান ও পেশোয়ারে আমাদের সৈন্যরা শহীদ হচ্ছেন। সরকারই শুধু বলতে পারে এটা কেন ঘটছে, যদিও এটা অনুচিত।’
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ১৯ টেস্ট ও ৫০ ওয়ানডে খেলা এই ব্যাটার বলেছেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন ক্রিকেটারদের নিরাপত্তায় একটা ছোট্ট ভুলও না হয়। সফরকারী দলগুলোকে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির সমান নিরাপত্তা দিতে হবে। আমি নিশ্চিত, মহসিন নাকভি এই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।’
পাকিস্তানের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার ব্যাপারে আগেই নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে ভারত। এমনকি আফগানিস্তানও নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়েছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পারলে অন্য দলগুলো পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হবে বলে মত বাসিত আলীর। বাংলাদেশের পর ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল পাকিস্তান সফর করবে। এই সিরিজগুলোতে পাকিস্তানের সিকিউরিটি ফোর্স গুলোকে সর্বদা প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাসিত।
এর আগে, ভারতের আপত্তির কারণে ২০২৩ এশিয়া কাপ আয়োজন করা হয়েছিল হাইব্রিড মডেলে। এবারও ভারত হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে চায়। তবে পাকিস্তান নিজেদের মাটিতেই পুরো টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায়। প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে সেভাবেই। ভারতের সম্ভাব্য সব ম্যাচেই রাখা হয়েছে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে।
(ঢাকাটাইমস/১৪ আগস্ট/এনবিডব্লিউ)