অভিনেত্রী হিমুর আত্মহত্যার পেছনে বয়ফ্রেন্ড রুফি, আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল

আদালত প্রতিবেদক
  প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০০| আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৫
অ- অ+

ছোটপর্দার অভিনেত্রী হোমায়রা নুসরাত হিমুর (৩৮) আত্মহত্যার পেছনের কারণ ছিলেন কথিত প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি (৩৬)। তাকেই অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।

গত সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সাব্বির হোসেন এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন, যা বুধবার জানা গেছে।

২০২৩ সালের ২ নভেম্বর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অভিনেত্রী হোমায়রা হিমু। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে তার মামা নাহিদ আক্তার বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রুফিকে আসামি করা হয়। পরদিন তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর ৪ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরবর্তীতে ওই বছরের ২২ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রুফির ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবী ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন অভিনেত্রী হোমায়রা হিমু। তার বিয়ে হলেও পরে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। একই ফ্ল্যাটে থাকতেন মেকআপম্যান ও আর্টিস্ট কবির আহম্মেদ মিহির। ২০১৪ সালে হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে রুফির বিয়ে হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যার কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পারিবারিক আত্মীয়তার সম্পর্কের সূত্রে রুফির সঙ্গে হিমুর পরিচয় হয়। হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে আসামি জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফির বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও হিমু ও রুফির মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। ঘটনার ছয় মাস আগে থেকে হিমুর বাসায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। মাঝে মধ্যে হিমুর বাসায় রাতযাপনও করতেন।

ঘটনার আগের দিন ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর হিমু মনোমালিন্যের জের ধরে রুফির মোবাইল ফোন নম্বর ও বিগো আইডি ব্লক করে দেন। এ নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। রুফি পরদিন ২ নভেম্বর হিমুর বাসায় আসেন। মিহির মেইন দরজা খুলে দিলে রুফি হিমুর বাসায় ঢোকেন। বাসায় প্রবেশের কিছুক্ষণ পরই মিহিরের রুমে এসে রুফি চিৎকার করে বলেন, ‘হিমু আত্মহত্যা করেছে’।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “মোবাইল ফোন নম্বর ও বিগো আইডি ব্লক করে দেওয়া নিয়ে হিমুর সঙ্গে রুফির বাসায় আসার পর ঝগড়া হয়। রুফি ভিকটিম হিমুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেন। এরপর রাগে ও অভিমানে হিমু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।”

তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মিহিরের রুমে এসে রুফি আত্মহত্যার কথা জানানোর পর মিহিরের জিজ্ঞাসায় রুফি জানান তখন তিনি বাথরুমে ছিলেন এবং তখনই হিমু আত্মহত্যা করেছেন। এরপর মিহির হিমুর রুমে গিয়ে তাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। এসময় রুমে থাকা কাচের দুটি গ্লাস ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান মিহির।

অভিযোগপত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন, মিহির ও আসামি রুফি হিমুকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় মরদেহ হাসপাতালে রেখে হিমুর দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যান রুফি।

হোমায়রা হিমুর জন্ম ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলায়। অভিনয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৫ সালে। টিভি নাটকে অভিনয় শুরুর পর নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় হিমুর অভিনয় দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় হিমুর। ওই সিনেমাটিতে তরু আপা চরিত্রে দেখা যায় তাকে।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রেললাইনে ভিডিও করতে গিয়ে ফটোগ্রাফারের মর্মান্তিক মৃত্যু
‘সাময়িকভাবে’ ফ্লাইট বন্ধ করলো নভোএয়ার
সিরাজগঞ্জে নেশার টাকা না দেওয়ায় ছেলের মারধরে প্রাণ গেল বাবার, মা আহত
আফতাবনগরে পশুর হাট না বসানোর দাবিতে মানববন্ধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা